themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121ইচ্ছাকৃতভাবে ২০০ বারের বেশি সাপের কামড় খেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের টিম ফ্রিড। গোখরাসহ বিশ্বের ভয়ঙ্কর নানা সাপের বিষ ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে নিয়েছেন ৭০০ বারের বেশি।
ফ্রিডের এক সময় ট্রাক মেরামত ছিল পেশা। পরে সাপ নিয়ে কাজ করা হয়ে যায় নেশা। শুরুতে তিনি নিজের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চেয়েছিলেন যাতে সাপ ধরার সময় তিনি নিজেকে রক্ষা করতে পারেন এবং নিজের এই কীর্তিকলাপ তিনি ভিডিও করে ইউটিউবে রেকর্ড করে রাখতেন।
তিনি বিষ সংগ্রহ করেছেন পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক কিছু সাপ থেকে, যার মধ্যে রয়েছে একাধিক প্রজাতির মাম্বা, কোবরা, তাইপান ও ক্রেইট।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, টিম ফ্রিডের রক্তে এমন এক ধরনের অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে যা মারাত্মক ধরনের বিষের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে।
টিমের রক্তে পাওয়া অ্যান্টিবডি প্রাণীদের ওপর পরীক্ষা করা হয়। ওই পরীক্ষায় দেখা গেছে এই অ্যান্টিবডি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীকে সাপের বিষের মারাত্মক ডোজ থেকে রক্ষা করেছে।
সাপের বিষ কাটাতে বর্তমানে যে থেরাপিগুলো প্রচলিত আছে তা নির্দিষ্ট প্রজাতির সাপের বিষ অনুযায়ী কাজ করে, অর্থাৎ কোনো ব্যক্তিকে যে সাপ কামড়েছে, সেই প্রজাতির সাপের জন্য তৈরি অ্যান্টিভেনমই দিতে হয়।
ফ্রিডের ১৮ বছরের এই প্রচেষ্টা সব ধরনের সাপের কামড়ের বিরুদ্ধে একটি সার্বজনীন অ্যান্টিভেনম তৈরির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রায় দুই দশক ধরে ইচ্ছাকৃতভাবে শরীরে সপের বিষ নিচ্ছেন টিম ফ্রিড। তবে এসব শুরুর আগে গোখরার দু’টি কাপড় খেয়ে কোমায় চলে গিয়েছিলেন তিনি।
টিম ফ্রিড বলেন, ‘আমি মারা যেতে চাইনি, আমার একটি আঙুলও হারাতে চাইনি। কাজ করতে পারব না এমন পরিস্থিতির শিকার হতে চাইনি আমি।’
প্রায় ১৮ বছর ধরে টিম ফ্রিড যে কাজ করছেন, তার ফলে সাপের কামড়ের চিকিৎসায় একটি সার্বজনিন ওষুধ বা অ্যান্টিভেনম তৈরি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যেখানে সাপের কামড়ে প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজারেরও মতো মানুষের মৃত্যু হয় এবং এর তিনগুণেরও বেশি মানুষ অঙ্গ কেটে ফেলা বা স্থায়ী পঙ্গুত্বের শিকার হয়।
ফ্রিড বলেন, তার লক্ষ্য ছিল বিশ্বের অন্যান্য মানুষের জন্য ভালো থেরাপি তৈরি করা। এটা একসময় আমার জীবনযাত্রার অংশ হয়ে যায়। আমি নিজেকে ঠেলে ঠেলে এগিয়ে যেতে থাকি-তাদের জন্য, যারা আমার থেকে আট হাজার মাইল দূরে সাপের কামড়ে মারা যাচ্ছে।’
বর্তমানে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয় ঘোড়ার মতো প্রাণীদের শরীরে সাপের বিষের ছোট ছোট ডোজ ইনজেকশন দিয়ে প্রয়োগ করার মাধ্যমে। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সেই বিষের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা সংগ্রহ করে থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু বিষ এবং অ্যান্টিভেনমকে একে অন্যের সাথে মিলিয়ে দিতে হয়, কারণ একেক প্রজাতির সাপের বিষ একেক রকম হয়ে থাকে।
আবার একই প্রজাতির সাপের মধ্যেও অঞ্চল ভেদে নানা বৈচিত্র্য থাকে, বিষে পার্থক্য থাকে—যেমন, ভারতের সাপ থেকে তৈরি অ্যান্টিভেনম শ্রীলঙ্কার সেই একই প্রজাতির সাপের বিরুদ্ধে কম কার্যকর।
এই সমস্যার সমাধানে বিজ্ঞানীরা খুঁজতে থাকেন এমন এক ধরনের অ্যান্টিবডি যাকে বলে ‘ব্রডলি নিউট্রিলাইজিং অ্যান্টিবডি বলা হয়-যা বিষের নির্দিষ্ট অংশ নয়, বরং সব ধরনের বিষে থাকা সাধারণ অংশগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করে।
এই সময়ই সেন্টিভ্যাক্স নামের বায়োটেক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ড. জ্যাকব গ্লানভিল খোঁজ পান টিম ফ্রিডের।