নিউইয়র্কে ‘পাঠাও’ প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহকে হত্যাকারীর ৪০ বছরের কারাদণ্ড

Reporter Name / ৩৭ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘পাঠাও’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহকে হত্যার ঘটনায় তার ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস হাসপিলকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন নিউ ইয়র্কের একটি আদালত। ২০২০ সালের জুলাইয়ে নিউইয়র্কের অভিজাত এক অ্যাপার্টমেন্টে ইলেক্ট্রিক করাত দিয়ে বাংলাদেশি এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তাকে টুকরো টুকরো করে হত্যা ও ৪ লাখ ডলার চুরি করেন।

মঙ্গলবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের সুপ্রিম কোর্ট ঘাতক টাইরেস হাসপিলকে দোষী সাব্যস্ত করে এই রায় ঘোষণা করেন।

নিউইয়র্কে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার ফাহিম সালেহ বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘পাঠাও’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও নাইজেরিয়াভিত্তিক মোটরবাইক স্টার্টআপ গোকাদার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ছিলেন। ২০২০ সালের ১৪ জুলাই ম্যানহাটানের ইস্ট হাউস্টন স্ট্রিট ও সাফোক স্ট্রিট–সংলগ্ন অভিজাত অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তার টুকরো টুকরো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে, ম্যানহাটনের ডিস্ট্রিক্ট আদালতের জুরি বোর্ড ঘাতক টাইরেস হাসপিলকে প্রথম ডিগ্রি হত্যাকাণ্ডে জড়িত, অর্থ লুট ও মরদেহ গুমের উদ্দেশে টুকরো টুকরো করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন। দোষী সাব্যস্তের দুই মাসের কম সময় পর ম্যানহাটনের সুপ্রিম কোর্ট ২৫ বছর বয়সী টাইরেস হাসপিলের বিরুদ্ধে ওই সাজা ঘোষণা করেন।

আদালতের বিচারকরা হত্যার অভিযোগের পাশাপাশি ফাহিম সালেহর কাছ থেকে চার লাখ ডলার চুরি ও অন্যান্য অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন। বিচারকরা বলেছেন, প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহর কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে নগদ অর্থ চুরি করছিলেন হাসপিল। পরে চুরির বিষয়টি জেনে যান ফাহিম। এই ঘটনায় হাসপিলকে মামলা থেকে বাঁচাতে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য দুই বছর সময় বেঁধে দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ফাহিমকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন হাসপিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তাকে হত্যার পর লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে টুকরো টুকরো করেন তিনি।

মঙ্গলবার ম্যানহাটনের সুপ্রিম কোর্টে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রায় ঘোষণার আগে আদালতের বিচারপতি এপ্রিল নিউবাওয়ের বলেন, হাসপিল লোভের ফাঁদে পড়ে উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহকে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন।

৩৩ বছর বয়সী ফাহিম সালেহ নিউইয়র্কের পককিপসি এলাকায় বেড়ে উঠেছিলেন। তার বাবা সালেহ উদ্দিন চট্টগ্রামের, আর মা নোয়াখালীর বাসিন্দা। যুক্তরাষ্ট্রের বেন্টলি ইউনিভার্সিটিতে ইনফরমেশন সিস্টেম নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন ফাহিম। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাও চালু করেন তিনি।

আদালতের বিচারকরা বলেছেন, ২০২০ সালের ১৩ জুলাই ফাহিমকে হত্যা করেন হাসপিল। পরের দিন ইলেক্ট্রিক করাত দিয়ে ফাহিমের শরীর টুকরো টুকরো করেন তিনি ফাহিমের মরদেহ কাটার এক পর্যায়ে করাতের ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে যায়। পরে চার্জার কিনতে বাইরে যান তিনি। কিন্তু এর মাঝেই পরিবারের সদস্যদের টেলিফোন পেয়ে ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্টে যান তার চাচাতো ভাই। তিনি সেখানে পৌঁছে ফাহিমের রক্তাক্ত খণ্ডবিখণ্ড মরদেহ দেখতে পান। পরে নিউইয়র্ক পুলিশ ঘাতক হাসপিলকে গ্রেফতার করে।

হাসপিলকে ২০১৮ সালের মে মাসে ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন সালেহ। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তার ছোট বোন রিফায়াত সালেহ আদালতের রায় ঘোষণার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। হাসপিলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমার ভাই তোমাকে একটা সুযোগ দিয়েছিল, যে সুযোগের যোগ্য তুমি নও। তুমি একজন অকৃতজ্ঞ মানুষ, তুমি একজন খুনি। তোমার প্রতি আমার কোনও সহানুভূতি নেই।”


আপনার মতামত লিখুন :

Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri