themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114আওয়ামী লীগ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বিরুদ্ধে এ খাত থেকে ৫০০ কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে দেশকে ডিজিটাল বানানোর নামে তৈরি করেন একের পর এক প্রকল্প। আর প্রতিটি প্রকল্পে কাজের নামে লুট করেছেন অর্থ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ আমলে মোস্তাফা জব্বারের রোষানলে পড়ে বাংলা সফটওয়্যার অভ্র। সম্প্রতি অভ্র নির্মাণের সঙ্গে জড়িতদের একুশে পদক দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরই দুই মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি মোস্তাফা জব্বারের সময়ে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পায়। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের কাছে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উপদেষ্টার নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে সাবেক ওই মন্ত্রীর গ্রহণ করা অনেক প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মোস্তাফা জব্বার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসার পর মন্ত্রণালয়ে র্যাডিসন ডিজিটাল টেকনোলজিস লিমিটেডের আধিপত্য তৈরি হয়। প্রতিষ্ঠানটি ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট সরবরাহ, সরকারি টেলিকম অপারেটর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ডাটা ওয়্যার হাউজিং ও বিজনেস ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম তৈরি, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) স্থাপন, নিম্নতম মজুরি বোর্ড ব্যবস্থাপনাসহ সরকারি অফিসে টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম, ল্যাপটপ, মোবাইলসহ সব ধরনের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে। অন্যদিকে বড় ধরনের অনিয়ম-জালিয়াতির প্রমাণ মিলেছে সরকারের নেওয়া লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে অর্থ তুলে নিয়েছে মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাওয়া আইটি প্রতিষ্ঠান র্যাডিসন ডিজিটাল টেকনোলজিস লিমিটেড। আর দক্ষ জনবল তৈরির ওই প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। উল্টো প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে অর্থছাড়ে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠে মোস্তাফা জব্বারের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের কাজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে ওই সময় সাত প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো লাভ হয়নি।
এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষক ও বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, আইসিটি ও টেলিকম মন্ত্রী থাকা অবস্থায় র্যাডিসনের ব্যাপক দাপট ছিল। অন্য কেউ তখন কাজ পেতেন না। এ ছাড়া মন্ত্রীর অধীনে থাকা এসও এফ ফান্ডের টাকা দিয়ে নিজের নির্বাচনি এলাকায় প্রেজেক্ট তৈরি করে কাজ করেছেন। শুধু আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকেই তার পছন্দের প্রতিষ্ঠানটিকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাজ দেওয়া হয়েছে। বাকি কাজ দেওয়া হয়েছে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে। সবমিলিয়ে ৫ শতাধিক কোটি টাকার বেশি হবে। তিনি বলেন, বেসিসে কখনো রাজনৈতিক প্রভাব ছিল না। উনি মন্ত্রী হওয়ার পরই বেসিসে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো শুরু করেন। ফাহিম মাশরুর বলেন, তিনি তার নিজের প্রতিষ্ঠান আনন্দ কম্পিউটার্সের বিজয় সফটওয়্যার মোবাইল ফোনে ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিলেন। এ জন্য তার প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে লাভবান হতো। একই সময় বিনামূল্যে অভ্র সফটওয়্যার ব্যবহার করা যেত। নিজের প্রতিষ্ঠানের মুনাফার জন্য তিনি অভ্র সফটওয়্যার আবিষ্কারকদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে হয়রানি করেন। ওই সময় মোবাইল ফোনে বিজয় কিবোর্ড বাধ্যতামূলক ব্যবহারের নির্দেশনার তীব্র প্রতিবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বিজয় কিবোর্ড মোবাইল ফোনে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। কারণ এর মালিক মোস্তাফা জব্বার একজন মন্ত্রী। কোনো মন্ত্রীর কোম্পানি সরকারের লাভজনক প্রক্রিয়ায় জড়িত হওয়া- এটা ভয়ংকর দুর্নীতি। এসব প্রসঙ্গে তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মোস্তাফা জব্বার মন্ত্রী থাকা অবস্থায় তার নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচার করতেন। এমনকি তিনি তার নিজস্ব অ্যাপ বিজয় বাধ্যতামূলক করার অপচেষ্টা করেছিলেন। তার পছন্দের প্রতিষ্ঠান টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি দাপিয়ে বেড়িয়েছে। ডিজিটালে আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন দেখালেও বাস্তবায়ন ছিল শূন্য। ওই মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং মোস্তাফা জব্বারের মধ্যে ছিল চরম দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বের মূল কারণ ছিল দুই পক্ষের স্বজন প্রীতি এবং দুর্নীতি। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে সব অপকর্মের ব্যাপারে তদন্ত চাই।