খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানসহ বিশ্বনেতারা। চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন।
এ ছাড়া খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে আজ (বুধবার) ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
শোকবার্তায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন এবং বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নেপাল সরকার এবং জনগণের পক্ষ থেকে আমি গভীরভাবে শোকাহত। খালেদা জিয়া আজীবন জনসেবার এক উত্তরাধিকার রেখে গেছেন, তাঁর স্থায়ী নেতৃত্ব তাঁর দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় একটি ঐতিহাসিক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে লেখা এক চিঠিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নয়নে খালেদা জিয়ার সক্রিয় সমর্থন ছিল। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন চীন ও বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব, সমতা ও পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষায় সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা অন্যতম জননেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে আমি শোকাহত। এদিকে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, ইরান, থাইল্যান্ড, সুইডেন, অস্ট্রেলিয়া, ভুটানসহ ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার কূটনৈতিক মিশনগুলো শোক প্রকাশ করেছে।
শোক বার্তায় জাতিসংঘ জানিয়েছে, জাতিসংঘ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পরিবার এবং প্রিয়জনদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সঙ্গে তাঁর সংহতি পুনর্ব্যক্ত করছে। মার্কিন দূতাবাসের শোকবার্তায় বলা হয়, খালেদা জিয়া তাঁর দেশের আধুনিক ইতিহাস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। চীন দূতাবাস জানায়, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমরাও শোকাহত। ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মিশন বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে বলেছে, বেগম খালেদা জিয়ার জীবন ও নেতৃত্ব বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বিশেষ অধ্যায় হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জার্মান দূতাবাস, ফ্রান্স দূতাবাস, জাপান দূতাবাস, ইরান দূতাবাস, অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশন ও কানাডা হাইকমিশন শোক জানিয়েছে।
শোকবইয়ে স্বাক্ষর করেছেন ২৮ কূটনীতিক : গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে শোকবই খোলা হয়েছে। এতে চীন, ভারত, পাকিস্তানসহ ২৮ দেশের কূটনীতিক স্বাক্ষর করছেন।এ ছাড়া শোকবইয়ে স্বাক্ষর করেন জার্মানি, ইরান, ওমান, আলজেরিয়া, কাতার, ফ্রান্স, নরওয়ে, সুইডেন, ব্রুনাই, ফিলিস্তিন, স্পেন, মরক্কো, ভুটান, ব্রাজিলসহ মোট ২৮ দেশের কূটনীতিক।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শোক জানাতে চেয়ারপারসনের অফিসে শোকবই খোলা হয়েছে। গতকাল দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়। আজ বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯ পর্যন্ত এবং আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শোকবইয়ে স্বাক্ষর গ্রহণ চলবে।