কেন এই জয়পরাজয়

Reporter Name / ৪ Time View
Update : বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীরা ভূমিধস বিজয় লাভ করেছেন। ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই বড় ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন তারা। পরাজিত প্রার্থীদের পক্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ ছাড়া নির্বাচনের ফল নিয়ে বড় কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। দীর্ঘদিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরব রাজনীতি শুরু করার পর নির্বাচনে নেমেই বড় চমক দেখিয়েছেন ছাত্রশিবিরের নেতারা। ডাকসুতে ভিপি পদে বিজয়ী হওয়া মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে বিজয়ী এস এম ফরহাদ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া সহসাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হওয়া মুহা. মহিউদ্দীন খান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের বর্তমান ও সাবেক শীর্ষ নেতাদের দিয়ে ডাকসুর শীর্ষ পদে প্যানেল দিয়েছিল ছাত্রশিবির। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচনে কোনো পদেই জয়ের মুখ দেখেননি। এনসিপির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের প্যানেল থেকেও কেউ বিজয়ী হতে পারেননি। তবে বাম সংগঠনের প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেল থেকে একজন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনের পর গতকাল শান্ত-নীরব ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে গতকালও সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আলোচনায় থাকা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা রীতিমতো ধরাশায়ী। যেখানে শিবির থেকে ভিপি পদে বিজয়ী সাদিক কায়েম পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট সেখানে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। ছাত্রদলের প্রার্থীর তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি ভোট পেয়েছেন ছাত্রশিবিরের সাদিক কায়েম। এই আবিদুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮৩ ভোট, আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের আবদুল কাদের পেয়েছেন ১ হাজার ১০৩ ভোট।

জিএস পদে ছাত্রদলের প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। তিনি কবি জসীমউদ্দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক। ছাত্রদলের প্রার্থীর চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ভোট পেয়ে জিএস পদে বিজয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবিরের এস এম ফরহাদ। তিনি পেয়েছেন ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট। মেঘমল্লার বসু পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট। অন্যদের মধ্যে মো. আবু বাকের মজুমদার পেয়েছেন ২ হাজার ১৩১ ভোট।

এজিএস পদে ছাত্রশিবির মনোনীত মুহা. মহিউদ্দীন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদি মায়েদ তার অর্ধেকেরও কম ৫ হাজার ৬৪ ভোট পেয়েছেন। মায়েদ বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক।

শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সারা দেশের মানুষের চোখ ছিল এ ডাকসু নির্বাচন ঘিরে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের প্রার্থীদের নিয়ে নানা আলোচনা থাকলেও জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের কাছে অনেক বড় ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন। নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের ভূমিধস বিজয় এবং ছাত্রদলের পরাজিত হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটার ও শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ডাকসুর এ নির্বাচনে ছাত্রদলের কর্মী-সমর্থক সবাই ভোট দেননি ছাত্রদলের প্রার্থীদের। কারণ হিসেবে এ ছাত্রসংগঠনে অন্তর্কোন্দল আর কেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্বে থাকা অনেক নেতার অসন্তোষকে দায়ী করেন। তারা বলছেন, প্যানেলে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলে নানান ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রদল পরিচালনা করা কর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই তারা ছিলেন মনোক্ষুণ্ন, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে নির্বাচনের ফলে। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আত্মীয়করণেরও অভিযোগ এনেছেন কোনো কোনো শিক্ষার্থী। অপরদিকে, ছাত্রশিবিরের প্যানেলের শীর্ষ পদগুলোতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শীর্ষ নেতারা। শিবিরের চেইন অব কমান্ডের কারণে নেতা-কর্মীরা ছিলেন সুসংঘবদ্ধ। এর বড় সুফল পেয়েছে শিবির। ভোটাররা জানান, ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এর অগ্রভাবে ছিলেন সাদিক কায়েম-এস এম ফরহাদ-মহিউদ্দীন। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের ভালো ইমেজ তৈরি হয়। ছাত্রদল বেশ কিছু কল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সামনের সারিতে ছিলেন শীর্ষ নেতারা (যারা প্রার্থী নন)। কিন্তু ছাত্রদল থেকে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তারা শীর্ষ ছাত্রনেতাদের মতো ততটা জনপ্রিয় হতে পারেননি। এ কারণেই অনেকটা পিছিয়ে পড়েছেন আবিদুল-হামীম-মায়েদরা। শিক্ষার্থীরা জানান, গত এক বছরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সারা দেশে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে বিএনপির এ ছাত্রসংগঠনের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা ক্রমে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। এটা ছাত্রদলের পরাজয়ের পেছনে অন্যতম কারণ।

অপরদিকে, জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেলেও তা খুব নগণ্য। আর জামায়াতে ইসলামী সারা দেশে নানা জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ছাত্র সংগঠন হিসেবে এর সুফল পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির- এমনটাই দাবি শিক্ষার্থীদের। প্রচারণাতেও ছাত্রদলের চেয়ে এগিয়ে ছিল শিবির। ডিজিটাল মাধ্যমে ছাত্রশিবির সবসময় সক্রিয় প্রচারণা চালিয়েছে, সে তুলনায় ডিজিটাল মাধ্যমে ছাত্রদলের প্রচারণা ছিল খুবই কম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫৭ শতাংশ ছাত্রী- সব মিলে ৩৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন। এই অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা বড় প্রভাব ফেলেছে নির্বাচনি ফলে। সূত্র জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা অনাবাসিক, ভিন্ন ছাত্রসংগঠনে সক্রিয় থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেছে ছাত্রশিবির। এর সুফলও পেয়েছে নির্বাচনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্ন মতাদর্শী শিক্ষক, কর্মকর্তাদের সঙ্গেও শিবিরের নেতারা সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, অন্য ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গেও ‘রুঢ়’ আচরণ করতে দেখা গেছে। জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করাদের মধ্যে শিবিরের প্রার্থী বেশি বলে মনে করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতেও শিবিরের প্যানেলে বেশি ভোট পড়েছে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।

নির্বাচনি ফলাফলে দেখা গেছে, ডাকসুতে ১২টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে নয়টিতেই জয়ী হয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির প্যানেলের প্রার্থীরা। এদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক ফাতিমা তাসনীম জুমা পেয়েছেন ১০,৬৩১ ভোট। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইকবাল হায়দার পেয়েছেন ৭,৮৩৩ ভোট। কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক উম্মে সালমা পেয়েছেন ৯,৯২০ ভোট। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জসীমউদ্দিন খান পেয়েছেন ৯,৭০৬ ভোট। ক্রীড়া সম্পাদক আরমান হোসেন পেয়েছেন ৭,২৫৫ ভোট। ছাত্র পরিবহন সম্পাদক আসিফ আবদুল্লাহ পেয়েছেন ৯,০৬১ ভোট। ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম পেয়েছেন ৯,৩৪৪ ভোট। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মিনহাজ পেয়েছেন ৭,০৩৮ ভোট। মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক সাখাওয়াত জাকারিয়া পেয়েছেন ১১,৭৪৭ ভোট। বাকি তিনটি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ পেয়েছেন ৭,৭৮২ ভোট, সমাজসেবা সম্পাদক যুবাইর বিন নেছারী পেয়েছেন ৭,৬০৮ ভোট। গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক সানজিদা আহমেদ তন্বি পেয়েছেন ১১,৭৭৮ ভোট।

ডাকসুতে বিজয় উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি শিবিরের : ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বিজয় লাভ করায় দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- শুকরিয়া আদায় করে দোয়া মাহফিল ও শব্বেদারি (নৈশ ইবাদত) এবং শহীদদের কবর জিয়ারত, শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ।

স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়ার অঙ্গীকার নবনির্বাচিত ভিপি-জিএস-এজিএসের : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেল ২৮টি পদের ২৩টিতেই বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে। গতকাল সকালে সিনেট ভবনে এ ফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফল শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন এ প্যানেল থেকে বিজয়ীরা। সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু নির্বাচনের এ বিজয়কে শিক্ষার্থীদের বিজয় বলে উল্লেখ করেছেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা ও কণ্ঠস্বরই হবে আমাদের আন্দোলন ও নেতৃত্বের মূল শক্তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘স্বপ্নের ক্যাম্পাসে’ রূপ না দেওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়েই আমরা আগামী দিনের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ব। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের যেসব প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন সেগুলোই আমাদের প্রত্যাশা। শিক্ষার্থীদের ভয়েসই হবে আমাদের ভয়েস। আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, যতদিন পর্যন্ত এই ক্যাম্পাসকে স্বপ্নের ক্যাম্পাসে রূপান্তর করতে না পারব, ততদিন আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদেরও ‘সহযোদ্ধা’ হিসেবে উল্লেখ করে সাদিক কায়েম বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমরা সবাই একসঙ্গে ছিলাম। তাই এই নির্বাচনে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তারা প্রত্যেকেই আমাদের সহযোদ্ধা। তাদের দেওয়া ইশতেহারও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই, তারা আমাদের উপদেষ্টা হিসেবে থাকুন, দিকনির্দেশনা দিন, আমাদের ভুল হলে ধরিয়ে দিন। সবাইকে নিয়ে আমরা এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তুলব।

ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নির্বাচিত হওয়ায় এ জয়কে ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর সম্মিলিত বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থী এস এম ফরহাদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনি ফলাফলের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ফরহাদ বলেন, আমি ফরহাদ জিএস হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। এটি ব্যক্তি ফরহাদের বা ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির কোনো অর্জন নয়। এটি মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর ভোটে প্রদত্ত একটি বিশাল আমানত। তাই আমি মনে করি, এটি শিক্ষার্থীদের বিজয়। তিনি আরও বলেন, আমার কাছে এই বিজয় কোনো ব্যক্তিগত আনন্দের বিষয় নয়। বরং এটি আমার জন্য একটি পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও বিশ্বাস রক্ষার দায়িত্ব এখন আমাদের ওপর বর্তেছে। আমি চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী আমার উপদেষ্টা হোক। আমার পথচলায় যদি কখনো ভুল করি বা সঠিক দিক থেকে বিচ্যুত হই, শিক্ষার্থীরা যেন আমাকে সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করেন, সমালোচনা করেন এবং পথ দেখান।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দেওয়া এই আমানত সঠিকভাবে রক্ষা করতে পারলেই আমাদের বিজয় অর্থবহ হবে।

ডাকসুতে নবনির্বাচিত সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) মহিউদ্দীন খান শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। গতকাল এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, এই ঐতিহাসিক বিজয়কে তখনই পূর্ণ মনে করব যেদিন আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলো পূর্ণ করতে পারব। এই আমানতের রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের প্রথম অঙ্গীকার। তিনি আরও লেখেন, বন্ধুর এই যাত্রায় সব বাধা মাড়িয়ে আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। সমর্থন, পরামর্শ আর সমালোচনার মাধ্যমে আমাদের আপনারা পথ দেখাবেন সেই প্রত্যাশা রাখি। আল্লাহ আমাদের হঠকারী ও অহংকারীতে পরিণত হওয়া থেকে পরিত্রাণ দান করুন, আমাদের পথকে মসৃণ করে দিন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri