themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার জের ধরে ভারতকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপের মুখে ফেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হঠাৎ করেই ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তের পরপরই বড় ধস নামে ভারতের শেয়ারবাজারে।
বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির সেনসেক্স সূচক ৩৩৫.৭১ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৮০,২০৮.২৮ পয়েন্টে। একই সঙ্গে নিফটি সূচক ১১৪.১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান নেয় ২৪,৪৬০.০৫-এ।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপিত বাণিজ্য অংশীদারদের তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে। আকস্মিক এই শুল্ক বৃদ্ধিতে চরম উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের বিনিয়োগ মহলে, বিশেষ করে রপ্তানি-নির্ভর খাতগুলোতে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই শুল্ক দীর্ঘমেয়াদে টিকে গেলে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ৩০ থেকে ৪০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এইচডিএফসি সিকিউরিটিজের সিইও ধীরাজ রেল্লি বলেন, “এ ধরনের শুল্ক আরোপ ভারতের অর্থনীতির গতি কমিয়ে দিতে পারে।” তবে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (RBI) এখনো তাদের জিডিপি পূর্বাভাস ৬.৫ শতাংশেই স্থির রেখেছে।
কোটাক মাহিন্দ্রা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সিইও নিলেশ শাহ সতর্ক করে বলেছেন, “শুল্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন বিনিয়োগ পরিবেশে বড় ধরনের ধাক্কা দিতে পারে।”
ভারতীয় রপ্তানিকারক সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনস-এর সভাপতি এস.সি. রালহান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন শুল্কের প্রভাব ভয়াবহ হতে চলেছে। তিনি বলেন, এই শুল্কে ভারতের প্রায় ৫৫ শতাংশ রপ্তানি প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত হবে। ৫০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক রপ্তানিকারকদের খরচ অনেক বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে ভারত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ৩০–৩৫ শতাংশ পিছিয়ে পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্র হলো ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৪ সালে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৭.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল।
লন্ডনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের বিশ্লেষক শীলান শাহ এক নোটে বলেন, ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ট্রাম্পের অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকলে, ভারতকে একটি উদীয়মান উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করাই কঠিন হয়ে যাবে। ভারতের জিডিপির প্রায় ২.৫ শতাংশই আসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে। ৫০ শতাংশ শুল্ক এই প্রবাহে বড় আঘাত হানবে।
ফলে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ থেকে কমে ৬ শতাংশে নেমে আসতে পারে—এমন পূর্বাভাসও দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের শীর্ষ রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে স্মার্টফোন, ওষুধ, রত্নপাথর, টেক্সটাইল ও শিল্প যন্ত্রপাতি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শ্রমনির্ভর গয়না ও সামুদ্রিক খাদ্য খাত।
ভারতের সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিকারক সংস্থা জানিয়েছে, ৫০ শতাংশ শুল্কে তাদের প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন বাজার হুমকির মুখে পড়েছে। অন্যদিকে, গয়না খাত থেকে গত বছর ভারতে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি আয় হয়েছে। এ খাতের প্রতিনিধিরা শুল্ককে ‘ধ্বংসাত্মক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং হাজার হাজার কর্মসংস্থানের ঝুঁকির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।