সিমলা চুক্তি কী, স্থগিত হলে ভারতের ওপর প্রভাব পড়বে?

Reporter Name / ১৩৪ Time View
Update : শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

ভারতশাসিত কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। দুই পক্ষই প্রতিশোধমূলক পাল্টপাল্টি পদক্ষেপ নিয়েছে।

গত মঙ্গলবারের ঘটনার পর দ্রুত কতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি। এই তালিকায় সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত, প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া, পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা বন্ধ এবং কূটনীতিকদের বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্তও রয়েছে।

জবাবে পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। জানানো হয়েছে ভারত আর পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারবে না। সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ থাকবে। এছাড়া ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তিও স্থগিতের ঘোষণা করেছে পাকিস্তান।

ভারতের দিক থেকে সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের পরপরই অবশ্য পাকিস্তানের ভেতরে সিমলা চুক্তি স্থগিতের দাবি ওঠে।

সিমলা চুক্তি স্থগিতের দাবি কেন

ভারতের দিক থেকে সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের পরপরই পাকিস্তানের ভেতরে সিমলা চুক্তি স্থগিতের দাবি উঠেছিল। পাকিস্তান এই চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর দেশটির অনেক নাগরিক মনে করছেন, এতে তারা উপকৃত হবেন।

এর পেছনে তারা যুক্তি দিয়েছেন, সিমলা চুক্তি পাকিস্তানকে কাশ্মীর ইস্যুর আন্তর্জাতিকীকরণ থেকে বিরত রেখেছে। ওই চুক্তি স্থগিত হলে পাকিস্তান কোনো ধরনের কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা ছাড়াই আন্তর্জাতিক ফোরামে কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন করতে পারবে।

তবে সিমলা চুক্তির অধীনে থাকা অবস্থাতেও অবশ্য পাকিস্তান তা করেছে। কিন্তু পাকিস্তানি বিশ্লেষকদের মতে, সিমলা চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কাশ্মীর ইস্যু ‘আরও জোর গলায়’ তুলে ধরতে পারবে পাকিস্তান।

সিমলা চুক্তি কী?

সিমলা চুক্তি এমন একটা আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছিল যেটিকে দুই দেশের মধ্যে ‘শত্রুতা’ অবসানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ের পর ১৯৭২ সালের জুলাইতে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এই চুক্তি।

তার মাস ছয়েক আগেই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। পাকিস্তানের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৪৫ হাজার সৈন্য এবং আধাসামরিক বাহিনীসহ ৭৩ হাজার যুদ্ধবন্দি ভারতের কারাগারে ছিল। পশ্চিম পাকিস্তানের প্রায় পাঁচ হাজার বর্গমাইল এলাকাও ভারতের দখলে ছিল।

এই পটভূমিতেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো ভারতের হিমাচল প্রদেশের সিমলায় বৈঠক করছিলেন। সেখানে যে সমঝোতা হয় তার নাম সিমলা চুক্তি।

চুক্তির দলিল স্বাক্ষরের তারিখ রেকর্ড করা হয়েছে ১৯৭২ সালের ২ জুলাই। তবে বাস্তবে ৩ জুলাই সকালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এই চুক্তি।

দুই দেশের মধ্যে ‘শত্রুতার’ অবসানের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমঝোতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সিমলা চুক্তির বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করা হয়েছিল।

সিমলা চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশ দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে, শান্তিপূর্ণ উপায়ে সব সমস্যার সমাধান করবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri