Headline :
গাজার সব সীমান্ত খুলে দেওয়ার আহ্বান জাতিসংঘ ও রেড ক্রসের আরেক দফা বাড়ল স্বর্ণের দাম, ভরি কত? শেখ হাসিনাকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ ‘সব প্রতিবেদন হুবহু’ প্রকাশ করায় ময়মনসিংহের ১১ সংবাদপত্রের ডিক্লারেশন বাতিল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নতুন কর্মসূচি ‘মার্চ টু সচিবালয়’ আওয়ামী লীগ লুটপাট করে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে: দুলু বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশ আসছেন অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী ড. অ্যালি দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গড়তে প্রধান উপদেষ্টার ৬ প্রস্তাবনা

নতুন মোড়কে পুরোনো নেতা

Reporter Name / ১০১ Time View
Update : সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ঘটনা এক. দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংরক্ষিত মহিলা আসনে আওয়ামী লীগের এমপি হতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর আরজিনা পারভীন চাঁদনী নামে এক নেত্রী। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার বাবা, দাদা এবং নানা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ছিলেন এবং তিনি নিজেও বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আরজিনা তার রাজনৈতিক অবস্থান বদলান। বিএনপিতে যোগ দেন এবং পলাশবাড়ী উপজেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতির পদে আসীন হন।

ঘটনা দুই. জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নম্বর সদস্য ও টনকী জোবায়দা জোব্বার উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মতিউর রহমান মুক্তা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের সঙ্গে সখ্য থাকায় চলতেন দাপটের সঙ্গে। তোয়াক্কা করতেন না কোনো কিছু। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সেই আওয়ামী লীগ নেতা এখন বিএনপির নেতা বনে গেছেন। কুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির এক নম্বর সদস্য হয়েছেন। এ নিয়ে তৃণমূল বিএনপিতে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

ঘটনা তিন. সম্প্রতি রাজধানীর পূর্বাচল এলাকায় মেগা সিটি নামক একটি হাউজিং প্রকল্পের জমি নিয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এতে তিন ভাইকে কুপিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। আহত এক ভাই এখন উত্তরার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

জানা গেছে, মেগা সিটি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ছত্রচ্ছায়ায় কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের সেই নেতা-কর্মীরা এখন বিএনপির পরিচয়ে এলাকায় বুক ফুলিয়ে চলছে। দাউদপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুহিন আখন্দ এখন যুবদল নেতা। যুবলীগ নেতা শাহিন আকন্দ এখন যুবদল নেতা। আওয়ামী লীগ নেতা এরমান হোসেন এখন বিএনপির নেতা। যুবলীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন এখন যুবদল নেতা। ছাত্রলীগ নেতা নাহিদ এখন ছাত্রদল নেতা। ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ মোল্লা এখন যুবদল নেতা। যুবলীগ নেতা আশাদ ফকির এখন যুবদল নেতা।

ঘটনা চার : উত্তরায় ছাত্র-জনতা গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড ও ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক এমপি হাবিব হাসানের সক্রিয় কর্মী ছিলেন সালাম আলী। ৫ আগস্টের পর সেই সালাম এখন বিএনপির রাজনীতিতে শুধু নিজেকে সক্রিয়ই নয় বরং সালাম আলী এরই মধ্যে নিজেকে উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির সভাপতি প্রার্থী ঘোষণা করে তুরাগ ও উত্তরার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীকে বিএনপিতে অনুপ্রবেশের সুযোগ করে দেওয়ার একাধিক ছবি ও তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন আল সোহেল, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা আবু সাঈদ, সাব্বির হোসেন, মুসা, যুবলীগ নেতা মানিক, আল আমিন, গন্ডার সোহেল, যুবলীগ নেতা রিপন, আলম, কামাল ও পশ্চিম থানা যুবলীগ নেতা সেলিমসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগের একাধিক নেতা-কর্মীকে সালাম আলী বিএনপিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শুধু গাইবান্ধা, জামালপুর, উত্তরা ও পূর্বাচলই নয়, সারা দেশেই চলছে এমন খোলস পাল্টানোর রাজনীতি। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা খোলস পাল্টে এখন কেউ বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দলে, কেউ বিএনপিতে, কেউ জামায়াত-শিবিরে যোগ দিচ্ছেন। কেউ কেউ সরাসরি যোগ না দিলেও সখ্য রেখে চলেছেন। আবার কেউ কেউ এলাকার প্রভাবশালী বিএনপি-জামায়াতের নেতার সঙ্গে চলাফেরা করছেন। ‘আস্থা’ অর্জনের জন্য আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা করছেন। বিভিন্ন মামলার বাদী হচ্ছেন। জুলাই বিপ্লবের আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছু কিছু নেতা যেমন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে ছিলেন, ঠিক একই পথে হাঁটছেন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও। শুধু ছাত্রলীগেরই নয়, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও একই পথে হাঁটছেন। সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের অনেকেই খোলস পাল্টে বিএনপি-জামায়াতে যোগদান করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপিতে যোগদানকারী নব্য হাইব্রিডরা নিজেদের ‘ইমানি পরীক্ষা’ দিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাসাবাড়ি, অফিসে বা দলীয় কার্যালয়ে হামলার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামলা-হামলা থেকে বাঁচার জন্য, কেউ নিরাপদ থাকার জন্য বিএনপিতে যোগদান করছেন। আবার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ‘ভবিষ্যৎ’ নেই এমন ভেবেও খোলস পাল্টাচ্ছেন অনেকে। এ জন্য কেউ কেউ এরই মাঝে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের বেশির ভাগের সঙ্গেই বিএনপির বড় বড় নেতাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। অনেক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে আবার ব্যবসায়িক সম্পর্কও চলমান আছে বিএনপির বাঘা বাঘা নেতাদের। সেই সম্পর্কের বাহানাতেই শাস্তি মওকুফের পথ খুঁজছেন তারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri