জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ডি ইউনিটের (জীববিজ্ঞান অনুষদ) ছাত্রীদের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৯ টা থেকে বিকেল সোয়া ৪ টা পর্যন্ত ৫ শিফটে চলে এ পরীক্ষা। আগামীকাল সোমবার ৪ শিফটে একই ইউনিটের ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তবে ওইদিন ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা।
একাধিক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওইদিন ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এবং ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখগুলোতে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। এতে ভর্তিচ্ছুদের অনেকেই সাভারের রেডিও কলোনি, সিএন্ডবি এলাকা থেকে পায়ে হেঁটে ক্যাম্পাসে আসেন। শুধু তাই নয়, ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত কোনো পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেননি অনেকেই। এমনকি যানজটের কারণে পরীক্ষা না দিতে পেরে কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে আহাজারিও করতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী ও জাবির ইংরেজি বিভাগের ৫৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতী ‘সপ্নগুলো চোখের সামনে ধ্বংস হতে দেখলাম’ ক্যাপশনে তার এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে টাঙ্গাইল জেলার টেন্টে সময় দিচ্ছিলাম। রিক্সা কম থাকার ঝামেলার কথা চিন্তা করে আমরা আগে থেকেই কয়েকটা বাইক রেডি রেখেছিলাম। আমরা সবাই আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি কিন্তু তবুও আমরা অনেক স্বপ্ন ধ্বংস হতে দেখেছি। বড় ভাইদের মত অনুযায়ী, এরকম জ্যাম বিগত ৫, ৭ বছরে তারা দেখেননি। অনেকে পূর্বনির্ধারিত সময়ে রওনা দিলেও সময়মতো আসতে পারেননি। অনেকে সাভার থেকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে রওনা দিয়েছে। আবার এমএইচ গেট দিয়ে ঢুকে সাভার স্কুল এন্ড কলেজ এ হেঁটে গিয়েছে।”
এতো কান্না, এতো আহাজারি আর সহ্য হচ্ছে না উল্লেখ করে চিশতি তার পোস্টে যানজটের ভোগান্তি সম্পর্কে লেখেন, “শেষ সময়গুলোতে আমার কানে ভেসে আসা কিছু কথা- বাবা তোমার হাতে পায়ে ধরি আমার মেয়েকে একটু দিয়ে আসো, ভাইয়া আমি ৫০০ টাকা দিচ্ছি আমাকে একটু বিজনেস ফ্যাকাল্টি দিয়ে আসেন, কেঁদে কেঁদে এক আপু বলছে আমি কী পরীক্ষা দিতে পারবো না ভাইয়া?..”
এদিকে, যানজট ও পরিবহন সংকট ছাড়াও ক্যাম্পাসে অভিভাবকদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার না থাকা, পার্কিং সমস্যা, সুপেয় পানির সংকট, খাবারের বাড়তি মূল্যের বিড়ম্বনা, পরীক্ষার কেন্দ্রগুলো সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশিকা না থাকা, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকাসহ বিভিন্ন ভোগান্তির অভিযোগও তুলেছেন অভিভাবক ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে, এধরনের সংকট সমাধানে অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের অনেকেই বিভাগীয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।