ইসরায়েলের সাবেক সেনা জেনারেল গিওরা আইল্যান্ড বলেছেন, এই যুদ্ধ ইসরায়েলের জন্য খুবই বাজেভাবে শেষ হয়েছে।
আল জাজিরার খবর অনুসারে, উত্তর গাজায় ইসরায়েল সেনাবাহিনীর সংঘটিত ধ্বংসযজ্ঞের পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকায় ফিরে আসছেন। হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে তারা নিজ বাসভূমে ফিরছেন।
জেনারেল আইল্যান্ড বলেন, নেটজারিম করিডোর খুলে দেওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েল হামাসের ওপর যে কৌশলগত প্রভাব ছিল, তা হারিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন হামাসের করুণার ওপর নির্ভরশীল।’
জেনারেল আইল্যান্ড দাবি করেন, ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রধান লক্ষ্যগুলো পূরণ হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে হামাসকে ধ্বংস করা, তাদের শাসনক্ষমতা থেকে সরানো এবং ইসরায়েলে বন্দীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা। তার মতে, ‘হামাস তার প্রায় সব লক্ষ্য অর্জন করেছে।’
‘জেনারেলদের পরিকল্পনা’ বইয়ের লেখক জেনারেল গিওরা আইল্যান্ড- উত্তর গাজাকে একটি বদ্ধ সামরিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা, মানবিক সহায়তা বন্ধ করা এবং সেখানে অবশিষ্ট ব্যক্তিদের যোদ্ধা হিসেবে বিবেচনা করার কথা বলেছিলেন।
সেপ্টেম্বরে এই পরিকল্পনা নেতানিয়াহু সরকারের কাছে উপস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু ইসরায়েল সরকার এর কোনো অংশ কার্যকর করেছে কিনা তা জানা যায়নি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অবশ্য এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
এদিকে ইসরায়েল নেটজারিম করিডোর রুট খুলে দেওয়ার পর ২ লাখ ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় ফিরে আসছেন। ক্রসিং খোলার দুই ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ২ লাখ ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় ফিরেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ১৫ মাসের যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো প্রিয়জনদের কাছে ফিরছেন। অনুমতি পাওয়ার পরই ফিলিস্তিনিরা হেঁটে উত্তর গাজার দিকে যাত্রা শুরু করেন।
ড্রোন ফুটেজে দেখা গেছে, অসংখ্য ফিলিস্তিনি কোলে সন্তান, কাঁধে ব্যাগপত্র নিয়ে উপকূলীয় পথ ধরে উত্তর দিকে হেঁটে রওনা হয়েছেন। কিন্তু যারা গাড়িতে রওনা হয়েছেন তাদের চেকপয়েন্টে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়।
গাজার একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা একটি সংবাদ সংস্থার সঙ্গে কথা বলার সময় জানিয়েছেন, ক্রসিং খোলার দুই ঘণ্টার মধ্যে ২ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ হেঁটে হেঁটে উত্তর গাজায় ফিরে এসেছেন। যদিও বেশির ভাগ ফিলিস্তিনি বাড়ি ফিরে ধ্বংসস্তুপ ছাড়া আর কিছুই পাচ্ছেন না। তারপরও ফিরে আসার আনন্দ ছিল তাদের চোখে মুখে।
কাঁধে বেশ কয়েকটি ব্যাগ ঝুলিয়ে উত্তর গাজায় ফেরা আহমেদ নামে এক বাস্তুচ্যুত তরুণ বলেন, ‘আমরা আমাদের পরিবারের সাথে দেখা করতে চাই। আমি আমার মা এবং বাবাকে দেখতে চাই। আমরা ১৫ মাস ধরে তাদের দেখিনি।’
১৯ বছরের আহমেদ আরও বলেন, ‘আমি দেড় বছর ধরে আমার পরিবারের সাথে দেখা করিনি। আমি আমার বাবা-মায়ে।’