বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের জলিসা বাজারে উপজেলা পরিষদের তৈরি করা একটি সড়ক খুঁড়ে দুই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ইট বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে ওই সড়কের ইট তুলে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাখা হয়।
রবিবার রাতে ইট বিক্রির খবর পেয়ে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শৈলেন চন্দ্র রায় বাদী হয়ে বেতাগী থানায় একটি মামলা দায়ের করলে অভিযুক্ত এক ইউপি সদস্যসহ মোট তিনজনকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন-বর্তমান ইউপি সদস্য ও হোসনাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. মাসুদ আলম মৃধা, জালাল হাওলাদার ও মো. রিয়াজ।
জানা গেছে, বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন রাস্তাটি কয়েক বছর আগে নির্মাণ করে উপজেলা পরিষদ। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড নতুন করে রাস্তাটির উপর বাঁধ নির্মাণে কাজ করছে। বাঁধের কাজের সুবিধার্থে ওই রাস্তার ইটগুলো উঠিয়ে পরিষদের সামনে রাখা হলে ওই ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মো. মাসুদ আলম মৃধা ও সাবেক ইউপি সদস্য ও হোসনাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সিদিক্কুর রহমান সরকারি ইটগুলো অন্যত্র বিক্রি করে দেয়।
রবিবার রাতে ৩ হাজার পিস ইট অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ার খবর পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে ফোনে বিষয়টি জানালে পুলিশ এসে ইটের দুইজন ক্রেতাকে আটক করে। পরে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী ইউপি সদস্য মাসুদকে পুলিশে সোপর্দ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. বজলুর রহমান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ শুরু হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তার ইটগুলো তুলে পরিষদের সামনে রাখা হয়। রবিবার রাতে পুলিশ এসে বিক্রিত কিছু ইট উদ্ধার করে। ইটের ক্রেতারা জানায়, তারা মাদুদ মেম্বার ও সিদ্দিক মেম্বারের কাছ থেকে ইটগুলো কিনেছে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. মাসুদ আলম মৃধা বলেন, বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হওয়ায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমি ইটগুলো তুলে পরিষদের সামনে স্তুপ করে রাখি। তবে সেখান থেকে কে ইট বিক্রি করেছে, তা আমি জানি না। আমাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জড়ানো হয়েছে।
বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ইট বিক্রির ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের সচিব বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। এ ঘটনায় বর্তমান ইউপি সদস্য মাসুদসহ তিনজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী বলেন, সরকারি ইট বিক্রির সাথে বর্তমান ও সাবেক দুই মেম্বারের জড়িত থাকার কথা জানতে পেরেছি। ইতিমধ্যে ইটের দুইজন ক্রেতা ও বর্তমান এক ইউপি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।