themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114কলকাতায় উদ্ধারকৃত খণ্ডবিখণ্ড লাশ, হাড়ের টুকরা নিহত ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের। আনারকন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনের ডিএনএ পরীক্ষার পর এই তথ্য পাওয়া গেছে। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সিআইডি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ওই মাংস এমপি আনারের কিনা, তা নিশ্চিত হতে গত নভেম্বর মাসে কলকাতায় গিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন এমপি আনারের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। পরে সেই নমুনা পাঠানো হয় ‘সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরী’তে।
সিআইডির এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, ডিএনএ রিপোর্ট নিশ্চিত করেছে যে, খালের পাড় ও সমতল থেকে উদ্ধার হওয়া মাংস ও হাড়গুলো বাংলাদেশের এমপির।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে ভারতে যান সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার। তিনি পূর্ব পরিচিত গোপাল বিশ্বাসের পশ্চিমবঙ্গের বরানগরের বাড়িতে ওঠেন। পরদিন ১৩ মে চিকিৎসা করাতে যাবেন বলে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু ওইদিন রাতেই নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের বহুতল আবাসনের ‘বিইউ-৫৬’ ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে তাকে খুন করা হয়। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন বলে পরে জানা যায়। মূলত আখতারুজ্জামানের নির্দেশেই জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদসহ ৪ জন সংসদ সদস্যকে ওই আবাসনে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
এই ঘটনায় বাংলাদেশের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি তিনজনকে গ্রেফতার করে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডির হাতে গ্রেফতার হয় দুইজন।
গ্রেফতার সিয়াম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি জানতে পারে, সংসদ সদস্যকে খুন ও খণ্ড-বিখণ্ড লাশ লোপাটের কাজে যুক্ত ছিলেন সিয়াম। নিউটাউনের অভিজাত সঞ্জীবা গার্ডেনের যে সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আসে, তাতেও সিয়ামকে দেখা যায়।
সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া আরেক অভিযুক্ত কসাই জিহাদ খুনের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে এমপি আনারের শরীর থেকে মাংস আলাদা করে সেগুলোকে ক্যারিব্যাগে ভরে রাখেন। পরে সেই লাশের টুকরোগুলোকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার ভাঙড় ব্লকের কৃষ্ণমাটি খাল এলাকায় ফেলা হয়। জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনটাই জানতে পারে তদন্তকারী কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে ওই খাল সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু হাড় উদ্ধার করেন সিআইডির কর্মকর্তারা। যা দেখে সিআইডি কর্মকর্তা ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান ছিল, সেগুলি মানুষের হাড়।
পাশাপাশি সঞ্জীবা গার্ডেনের আবাসনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় ৪ কেজি মাংস। উদ্ধারকৃত ওই মাংস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় ‘সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরী (CFSL)’-এ। CFSL-এর প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, পুরুষ মানুষের মাংস ছিল সেগুলো।
যদিও খণ্ড-বিখণ্ড লাশ এমপি আনারের কিনা, তা নিশ্চিত হতেই ডিএনএ পরীক্ষা জরুরি ছিল। বিভিন্ন কারণে বিলম্বের পর নভেম্বর মাসে কলকাতা গিয়ে সিআইডি কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেন এবং ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন কন্যা ডরিন।
মামলার তদন্ত করতে কলকাতায় যান তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদসহ একদল প্রতিনিধি। সঞ্জীবা গার্ডেন, বাগজোলা খালসহ বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনের পাশাপাশি দফায় দফায় সিআইডি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন ডিবি প্রধান।
এদিকে গত ২৩ মে জিহাদ হাওলাদার এবং ৭ জুন সিয়াম হোসেনকে গ্রেফতারের পর আগস্ট মাসে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত জেলা আদালতে প্রায় ১২০০ পাতার চার্জশিট জমা দেয় সিআইডি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩০২ (অপরাধমূলক নর হত্যা), ২০১ (তথ্য প্রমাণ লোপাট) এবং ৩৪ (সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত করা) এবং ১৪ ফরেনার্স আইনে মামলা দেওয়া হয়।