Headline :

জুলাই বিপ্লবে আহত হাসানকে থাইল্যান্ড নেওয়া হচ্ছে

Reporter Name / ১১৯ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

হাসান (২১)। একজন ইয়াতিম। বাবা মারা গেছেন বেশ আগেই। পড়াশোনা করানোর মতো কেউ ছিল না। কিন্তু নিজের অদম্য উৎসাহে হিফজ সম্পন্ন করে হাফেজ হন। কম বয়সে সংসারের ঘানি তার কাঁধে পড়ে। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল থেকে চট্টগ্রাম যান তারা। সেখানে মা গার্মেন্টসে চাকরি নেন। কিন্তু ২ মেয়ে ও ১ ছেলেকে নিয়ে বিপদে পড়েন তিনি। তাদের পড়াশোনা করাতে গিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। মায়ের এ বিপদ থেকে উদ্ধার করেন হাসান। নিজ থেকে মাকে বলেন তাকে পড়ানোর দরকার নেই। স্কুলে ভর্তি হলেও পড়াশোনা বন্ধ করে দেয় হাসান। সংসারের বাড়তি আয়ের জন্য চট্টগ্রামের ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের কাজ শিখতে থাকে হাসান। কাজে গেলেও মন পড়ে থাকে স্কুল-কলেজে। কাজ শেষ হলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিত সে। ছাত্র আন্দোলন হলে বন্ধুদের সাথে যোগ দেয় সে। ৪ আগস্ট আওয়ামী-ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা ছাত্র-জনতার আন্দোলন প্রতিহত করতে নামে।

হাসানের বন্ধু মো. জাকির বলেন, ৪ আগস্ট সকাল ১০ টায় হাসানসহ আমরা বন্ধুরা নিউমার্কেট থেকে আন্দোলন শুরু করি। ধীরে ধীরে আমরা এগিয়ে টাইগার পাশ মোড়ে আসি। আমাদের সামনে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা পড়ে যায়। আমরা পালিয়ে আসি। পেছনে থেকে ছাত্রলীগ আক্রমণ করে। আমার পাশে ছিলো হাসান। আমার বাসা ছিলো পাশেই। আমি ও হাসান দৌড় দেই। আমি কিছুটা এগিয়ে যাই। বাসায় ঢুকে দেখি হাসান সাথে নেই। বাসা থেকে বের হয়ে দেখি হাসান মাটিতে পড়ে আছে। ওকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হকিস্টিক দিয়ে পেটাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর ওরা চলে গেলে আমি কাছে গিয়ে ভয়াবহ দৃশ্য দেখি। দেখি গুলি লেগে তার মাথার হাড় ভেঙে গেছে। ব্রেনের কিছু অংশ রাস্তায় পড়ে আছে। কতটা পশু হলে মানুষকে এভাবে মারা যায়। দ্রুত তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করাই। সেখানে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। ৫ তারিখে তার অপারেশন হয়। ৩ সেপ্টেম্বর তাকে সিএমএইচে আনা হয়। চিকিৎসায় উন্নতি না হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে হাসানের ছোটবোন সুবর্ণা বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। হাসানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছেন। দেশবাসীর কাছে আমরা দোয়া চাই। হাসান যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসে। আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় তাকে এয়ার এম্বুলেন্সে করে থাইল্যান্ডের বেজথানি হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। রাত সাড়ে ৮ টায় তাকে নেয়ার জন্য থাইল্যান্ড থেকে এয়ার এম্বুলেন্স আসে। তাকে বিদায় জানানোর জন্য এয়ারপোর্টে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো আবু জাফর, জাতীয় নাগরিক কমিটির ডা. মো. আব্দুল আহাদ, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri