হবিগঞ্জে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল

Reporter Name / ৩ Time View
Update : বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৪

পাহাড় টিলা হাওর বন, হবিগঞ্জের পর্যটন’ একটা সময় এই স্লোগান ছিল বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু সময়ের পরিবর্তে পাল্টে যাচ্ছে স্লোগান। একদিকে যেমন উজাড় হচ্ছে জেলার বনাঞ্চল, অন্যদিকে চরম খাদ্য সংকটে পড়ছে বনের পশু পাখিরা। খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসে বন্যপ্রাণীরা যেমন ধরা পড়ছে শিকারিদের পাতা ফাঁদে আবার গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মারা যাচ্ছে সাপ, বানরসহ নানা পশুপাখি। এ ছাড়া সংরক্ষিত এলাকাগুলোয় সাধারণ মানুষের অবাধ যাতায়াতের কারণেও পশুপাখি তাদের আবাসস্থল হারাচ্ছে। তাই প্রকৃতির অনন্য সৌন্দর্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে এ বিষয়ে আর সচেতন হওয়ার আহ্বান পরিবেশবাদীদের।

জানা যায়, জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। ২৪৩ হেক্টর এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে বিস্তীর্ণ এই উদ্যানটি। এ ছাড়া এই উদ্যানের আশপাশে রয়েছে অন্তত ৯টি চা বাগান। রয়েছে বহু উঁচু উঁচু টিলাও। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে যেমন রয়েছে প্রায় ২ শতাধিক প্রজাতির গাছপালা, তেমনি রয়েছে ১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তু। এর মধ্যে প্রায় ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরিসৃপ, ৬ প্রজাতির উভচর। আরও আছে প্রায় ১৫০-২০০ প্রজাতির পাখি। এটি বাংলাদেশের একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং পাখিদের একটি অভয়াশ্রম। বনে লজ্জাবতী বানর, উল্লুক, চশমা পরা হনুমান, কুলু বানর, মেছো বাঘ, মায়া হরিণ, সাপ, ধনেশ, বনমোরগ, লালমাথা ট্রগন, কাঠঠোকরা, ময়না, ভিমরাজ, শ্যামা, ঝুটিপাঙ্গা, শালিক, হলুদ পাখি, টিয়াসহ নানা প্রজাতির পশুপাখি রয়েছে। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য বৃক্ষের মধ্যে চাপালিশ, আউয়াল, কাঁকড়া, হারগাজা, হরীতকী, পাম, লটকন, আমড়া, গামার, কাউ, ডুমরসহ রয়েছে আরও নানা জাতের গাছগাছালি। আর এসব গাছগাছালির ফলমূল খেয়ে বেঁচে থাকে বনে বসবাস করা প্রাণীরা। কিন্তু বর্তমানে বন থেকে গাছ পাচার, পাহাড় টিলা কেটে মাটি-বালু উত্তোলন, সংরক্ষিত এলাকায় অবাধ সধারণ মানুষের যাতায়াত, শিকারিদের ফাঁদ, বিদ্যুতের ব্যবহার, দোকানপাঠ নির্মাণসহ নানা কারণে আবাসস্থল হারাচ্ছে এসব বন্যপ্রাণী।

খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসে মারা যাচ্ছে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে। আবার কোনো কোনো পশুপাখি ধরা পড়ছে শিকারিদের ফাঁদে। শুধু সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান নয়, একই অবস্থা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতি বনাঞ্চল রেমা কালেঙ্গার। যার অবস্থানও একই উপজেলায়। প্রায় ১৭৯৫ হেক্টর আয়তনের এ বনভূমিতেও রয়েছে ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, সাত প্রজাতির উভচর, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ১৬৭ প্রজাতির পাখি। এ ছাড়া ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এসব পশুপাখিগুলোকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। এখনই যদি জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমরা এগিয়ে না আসি তা হলে আমাদের সামনে কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে। তাই বন্যপ্রাণীদের বনে রেখে তাদের খাবারসহ অবাধ বিচরণের ব্যবস্থা আমাদেরই করে দিতে হবে। আর এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও সচেতন ও আন্তরিক হতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri katarakt ameliyati
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri katarakt ameliyati