উত্তর কোরিয়া একটি নতুন ও শক্তিশালী ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দেশটি তার পূর্ব উপকূলের সমুদ্রের দিকে দূরপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করে। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে এটিই এখন পর্যন্ত সময়ের হিসেবে দীর্ঘতম উড্ডয়ন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল নাকাতানি বলেছেন, পিয়ংইয়ংয়ের অতীতের যে কোনও ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় এই ক্ষেপণাস্ত্রটি দীর্ঘতম সময় উড্ডয়ন করেছে।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এই ক্ষেপণাস্ত্রকে ‘শক্তিশালী কৌশলগত অস্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা দেশটির নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলা শত্রুদের জন্য এক সতর্ক সংকেত বলেও মনে করছেন কিম। একে শত্রুদের বিরুদ্ধে ‘যথোপযুক্ত সামরিক পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে কিম জং উন বলেন, এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা এমন একটি সামরিক পদক্ষেপ, যা পুরোপুরি শত্রুদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধের প্রয়োজন মেটায়। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে আঞ্চলিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছে এবং আমাদের প্রজাতন্ত্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে, তাদের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা।
বৃহস্পতিবারের পরীক্ষাটি উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘতম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ছিল। যেটি ৮৭ মিনিটের জন্য আকাশে ভাসমান ছিল। দক্ষিণ কোরিয়ার মতে, এটি উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এটি পিয়ংইয়ংয়ের কাছাকাছি অঞ্চল থেকে নিক্ষেপ করা হয় এবং জাপানের ওকুশিরি দ্বীপের পশ্চিমে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে আঘাত হানে।
এ বিষয়ে জাপান সরকার জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ৭,০০০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছায় এবং ১,০০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল নাকাতানি বলেছেন, উত্তর কোরিয়া নতুন ধরনের একটি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়েছে, যা ৪ হাজার ৩৫০ মাইল উচ্চতা স্পর্শ করে। এটি পূর্ববর্তী সকল উৎক্ষেপণের চেয়ে অনেক বেশি উচ্চতায় পৌঁছায়, যা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উচ্চতার ১৭ গুণ বেশি।
এদিকে, উত্তর কোরিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এবং তার দক্ষিণ কোরিয় মিত্র কিম ইয়ং-হিউন ওয়াশিংটনে বৈঠক করেন এবং উত্তর কোরিয়ার রাশিয়ায় সেনা মোতায়েনের তীব্র নিন্দা জানান। দক্ষিণ কোরিয়া জানায় যে, এই সেনা মোতায়েন তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। কারণ উত্তর কোরিয়া এতে আধুনিক যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে এবং মস্কো থেকে পারমাণবিক ও কৌশলগত অস্ত্রের প্রযুক্তিগত সহায়তা পেতে পারে। সূত্র : রয়টার্স ও দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।