বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ নীতিমালার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিম কোর্ট বার) নেতারা। একই সঙ্গে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় অবসরের পর বিচারপতিদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া বন্ধও চেয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর কলেজ রোডস্থ বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন।
এ সময় সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, আফজাল হোসেন খান, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কমিশন প্রধান আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শাহ আবু নাইম নাঈম মোমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশন সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমদাদুল হক, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলী, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাইয়েদ আমিনুল ইসলাম, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মাজদার হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানিম হোসেইন শাওন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল সাড়ে তিনটায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা সোয়া ৫টা পর্যন্ত এই মতবিনিময় সভা চলে।
সভা শেষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, স্বাধীন বিচার বিভাগ গঠনের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে মতবিনিময় করতে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন থেকে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমরা আজকের এই মতবিনিময় সভায় সবাই নিজ নিজ দৃষ্টিকোন থেকে মতামত দিয়েছি। তবে দু’টি বিষয়ে আমরা ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রস্তাবনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, এর একটি হলো বিচারপতি নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে নীতিমালা তৈরি করা ও অন্যটি অবসরের পর বিচারপতিদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়া বন্ধ করা।
তিনি বলেন, এর মধ্যে বিচারপতি নিয়োগ নীতিমালার ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আমরা কমিশনকে বলেছি, সংবিধানে থাকার পরও স্বাধীনতার পর কোনো সরকারই বিচারপতি নিয়োগ নীতিমালা করেনি। যে সরকারই ক্ষমতায় আসেন, তারা কেউ বিচারপতি নিয়োগে নীতিমালাটা করেন না। নিজেদের হাতে রাখেন। আমরা এটা বন্ধের বিষয়ে পদক্ষেপ চেয়েছি।
জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, আমাদের আরেকটি বিষয় ছিল বিচারপতিদের অবসরের পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়া।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ই দেখি, বিচারপতিরা অবসরের পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন বা তাদের দেওয়া হয়। বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হন। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক এক রায় দিয়ে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হয়ে গেলেন। তার এক রায়ে দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। ওনার মতো আরও অনেক বিচারপতিকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বসানো হয়েছে। আমরা এই সিস্টেমটা বন্ধ চেয়েছি। কমিশন আমাদের সব প্রস্তাব লিখিত আকারে বৃহস্পতিবারের মধ্যে জমা দিতে বলেছেন।