themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান আলোচিত-সমালোচিত মুখ। তার নির্বাচনি এলাকা ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জকে নববধূর মতো সাজানোর ঘোষণা দিলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি তেমন কোনো কাজই করেননি। তার সংসদীয় এলাকা বছরজুড়েই পানিতে ডুবে থাকে। রাস্তাঘাটের অবস্থাও ভালো নয়। এলাকার অধিকাংশ রাস্তা খানাখন্দে ভরা। সংসদীয় এলাকায় তেমন কোনো উন্নয়ন করতে না পারলেও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ফুলেফেঁপে টাকার কুমির বনেছেন শামীম ওসমান। নিজ ও নিজের পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা জমিয়েছেন। দেশ ও দেশের বাইরে রয়েছে তার বিশাল ব্যবসাবাণিজ্য। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলতেন- ‘দুই আর দুই’ মিলে অনেকে চার বললেও আমি দেখি ২২। কারণ আমি আগে থেকেই অনেক কিছু অনুমান করতে পারি। সেই বক্তব্য দেওয়া শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের নিষ্ঠুর পতন হবে, সেটা তিনি বুঝতে পারেননি। সেই সঙ্গে তাকেও দেশ ছেড়ে পালাতে হবে সেটাও উপলব্ধি করতে পারেননি।
ডুবন্ত জনপদের নেতা : ফতুল্লা এলাকায় বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতার সমস্যা দীর্ঘদিনের। ডিএনডি বাঁধের ভিতরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এ কাজ শেষ হলে বাঁধের ভিতরে জলাবদ্ধতা কমে যাবে। দৃষ্টিনন্দন হবে ডিএনডি বাঁধের ভিতরের এলাকা। কিন্তু বাঁধের বাইরেও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র জলাবদ্ধতা। অনেক এলাকায় বছরজুড়েই থাকে কৃত্রিম বন্যা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর এ সমস্যা থাকলেও সেগুলো সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেননি শামীম ওসমান। তাই প্রভাবশালী শামীম ওসমানকে বলা হতো ডুবন্ত জনপদের নেতা। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের অন্যতম শিল্পাঞ্চল ফতুল্লার বিসিক। এখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কয়েক হাজার এবং শ্রমিকের সংখ্যা কয়েক লাখ। প্রতি বছর এ অঞ্চল থেকে সরকার কোটি টাকা রাজস্ব পায়। অথচ এ অঞ্চলে কর্মরত শ্রমিকদের দুর্ভোগের শেষ নেই। ডায়িংয়ের কেমিক্যাল মিশ্রিত বিষাক্ত পানি মাড়িয়েই কর্মক্ষেত্রে যেতে হয় কয়েক লাখ শ্রমিককে। এ ব্যাপারেও উদাসীন ছিলেন শামীম ওসমান। ২০২৪ সালে হলফনামায় শামীম ওসমান নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তার মোট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাঁচটি। জ্বালানি তেল আমদানি পরিবহন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেড এন করপোরেশন, জেড এন শিপিং লাইনস লিমিটেড, মাইশা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, খান ব্রাদার্স ইনফোটেক ও উইসজম নিটিং মিলসকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বিগত দিনে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে দুদকের দুটি মামলাসহ ১৭টি মামলা দায়ের হয়েছিল যার মধ্যে কয়েকটি মামলা হাই কোর্ট কর্তৃক স্থগিত রয়েছে ও বেশ কিছু মামলা রাষ্ট্র কর্তৃক প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং কয়েকটিতে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম : শামীম ওসমান প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, স্বৈরশাসকের চারণভূমি ছিল নারায়ণগঞ্জ। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার সমর্থনেই শামীম ওসমান গডফাদার হয়েছিলেন। তার বিশাল বাহিনী ছিল যারা অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত থাকত। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ও তার অস্ত্রের মহড়া নারায়ণগঞ্জবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। তার কাছে নিজ দলের লোকজনও জিম্মি ছিল। আর এ বিষয়টি শেখ হাসিনাও জানতেন, কিন্তু শামীম ওসমানকে ব্যবহারের জন্য কেউ কিছু বলত না। বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর সীমাহীন নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছেন শামীম ওসমান। সব মিলিয়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল নারায়ণগঞ্জে। তিনি আরও বলেন, শামীম ওসমান এলাকায় কোনো উন্নয়ন কাজ করতে পারেননি। আমরা শুধু শুনেছি তিনি এ কাজ নিয়ে এসেছেন সেই কাজ নিয়ে এসেছেন। কিন্তু আমরা কোনো উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছি না। যদি তিনি উন্নয়ন কাজ করতেন তাহলে বর্তমানে কোনো সমস্যা থাকত না। আমাদের ধারণা যে বরাদ্দ এনেছেন সেগুলো কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।