ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দেয়া নাসরুল্লাহকে হারিয়ে অনেকটাই চাপে হিজবুল্লাহ। এর মাঝেই হিজবুল্লাহর পরবর্তী নেতা কে হতে পারে সে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। এই তালিকায় সবার ওপরে আছে হাশেম সাফিয়েদ্দিনের নাম।
১৯৬৪ সালে দক্ষিণ লেবাননের দেইর কানুন আল নাহরে জন্মগ্রহণকারী হাশেম প্রায় তিন দশক ধরে হিজবুল্লাহর একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি ১৯৯৪ সাল থেকে উত্তরাধিকারের জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং ইরানের শিয়া বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দু কোম থেকে বৈরুতে আসেন নির্বাহী পরিষদের প্রধান হওয়ার জন্য, যা পার্টির সরকার হিসাবে বিবেচিত হয়।
হাশেম কার্যকরভাবে সংগঠনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নাসরুল্লাহর ডান হাত ছিলেন। লেবাননের গৃহযুদ্ধের পরে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংগঠনটির নেতৃত্ব দেন।
তেহরানের সাথে হাশেমের চমৎকার সম্পর্কও রয়েছে। ইরানের ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির অফিসের সাথে সরাসরি টেলিফোন লাইন রয়েছে তার এবং সম্ভবত ইরানের পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতিদের সাথে যোগাযোগও আছে।
সংগঠনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, নাসরুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনাযর আগেই তাকে নেতৃত্বের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। হিজবুল্লাহর সাবেক নিরাপত্তা প্রধান ইমাদ মুগনিয়ের নির্দেশনাতে তিনি তৈরি হন।
২০২০ সালে ইরানের সাথে হাশেমের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। তার ছেলে মার্কিন বিমান হামলায় বাগদাদে নিহত ইরানের কুদস ফোর্সের সাবেক কমান্ডার কাসেম সোলেইমানির মেয়েকে বিয়ে করেন।
হাশেম সাফিয়েদ্দিন হাসান নাসরুল্লাহর চাচাতো ভাই। তিনি মহানবী হযরত মোহাম্মদের (সা.) বংশধর হিসেবে পরিচিতমূলক কালো পাগড়ি পরেন। ২০১৭ সালে তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র।
হাসেম সাফিয়েদ্দিনের পারিবারিক সম্পর্ক এবং নাসরাল্লাহর সঙ্গে তার শারীরিক সাদৃশ্য রয়েছে। দাবি করা হয় তিনি মহানবী হযরত মোহাম্মদের (সা.) বংশধর। এ কারণে তার বিশেষ ধর্মীয় মর্যাদা রয়েছে। এসব বিষয় হিজবুল্লাহর হাল ধরতে তার পক্ষে সহায়ক হবে।
মার্কিন নীতির সমালোচনায় বেশ সোচ্চার হাসেম। হিজবুল্লাহর ওপর আমেরিকান চাপের প্রতিক্রিয়ায় তিনি ২০১৭ সালে বলেছিলেন, মানসিকভাবে বিকৃত, পাগল মার্কিন প্রশাসন, যার নেতৃত্বে ট্রাম্প রয়েছেন, প্রতিরোধ আন্দোলনকে ক্ষতি করতে পারবে না। তাদের পদক্ষেপ শুধু হিজবুল্লাহর সংকল্পকেই শক্তিশালী করবে।