themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121ঈদুল আজহার পর থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চালের বাজারে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। বিশেষ করে মিনিকেট চালের দাম কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে। শুধু মিনিকেট নয়, এর প্রভাব পড়েছে মাঝারি ও মোটা চালের দামেও। এসব চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত। চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সুযোগ বুঝে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও মিল মালিক ধান সংগ্রহ করে কৃত্রিমভাবে চাল মজুত করছেন। যার ফলে দাম বাড়ে খুচরা বাজারে। কারওয়ান বাজার ও মালিবাগের চাল বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে ডায়মন্ড, সাগর, রসিদসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। ‘মোজাম্মেল’ ব্র্যান্ডের মিনিকেটের দাম ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি, যা ঈদের আগে ছিল ৭৮ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আবদুর রহিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সরবরাহে ঘাটতি নেই, তবে উৎপাদনস্থল থেকে ধান চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই বিক্রয়মূল্য বাড়াতে হচ্ছে।’ মিনিকেট চালের দাম বৃদ্ধির কারণে অনেক পরিবার এখন মাঝারি বা মোটা চালের দিকে ঝুঁকছে। ফলে এসব চালেও বেড়েছে দাম। স্বর্ণা জাতের মোটা চাল এখন কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ৫৩ থেকে ৫৪ টাকা। ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকা দরে।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহে সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে গড়ে ৩ টাকা, আর মোটা ও মাঝারি চালের দাম বেড়েছে এক টাকা করে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে বগুড়ার বাজারে হঠাৎ দাম বেড়েছে মোটা ও চিকন চালের। প্রকারভেদে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। আর খুচরা বাজারে বেড়েছে ৬ থেকে ৭ টাকা। আবার জাতভেদে কোন কোন চালে কেজি প্রতি আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সবজি ও ধান-চাল উৎপাদনকারী অন্যতম জেলা বগুড়া। বোরো মৌসুম মাত্র শেষ হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ফসল ভালো হয়েছে। আবার ফসল নষ্টও হয়নি। তারপরও বগুড়ায় হঠাৎ চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বগুড়ার বাজারে দাম বেড়েছে মোটা ও চিকন চালের। প্রকারভেদে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। আর খুচরা বাজারে বেড়েছে ৬ থকে ৭ টাকা। জাতভেদে কোনো কোনো চালে কেজিপ্রতি আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাইকারিতে চালের দাম বাড়ায় স্থানীয় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। এদিকে হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।
গত বুধবার বগুড়া শহরের গোদারপাড়া, ফতেহ আলী ও কলোনি বাজারসহ শহরের বিভিন্ন চালের বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে মানভেদে কেজি প্রতি ৫-৬ টাকা বেড়ে জিরাশাইল ৭০ থেকে ৭২ টাকা, কাটারি ৭৫ থকে ৮০ টাকা, শুভলতা ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, ব্রি আর-২৮ চাল ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এবার অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ ২০২৫ মৌসুমের আওতায় সরকারি প্রতি কেজি ধানের সংগ্রহ মূল্য ৩৬ টাকা, প্রতি কেজি সিদ্ধ চালের সংগ্রহ মূল্য ৪৯ টাকা ও প্রতি কেজি আতপ চালের মূল্য ৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বড় বড় ব্যবসায়ীরা বেশি দাম দিয়ে ধান কিনছেন। এ কারণে ছোট ব্যবসায়ীরা বড় বড় মিল মালিকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না।
বগুড়া শহরের প্রধান চালের আড়ত গোদারপাড়া বাজারের হৃদয় চাল ঘরের আড়তদার এম এ হামিদ জিল্লুর জানান, হঠাৎ পাইকারিতে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৩ টাকা চালের দাম বেড়েছে। তবে গত মঙ্গলবারের চেয়ে বুধবার চালের দাম কিছুটা কমেছে। কাটারিভোগ ও মিনিকেট চাল পাইকারিতে ২৫ কেজি ওজনের বস্তা বিক্রি হচ্ছে ১৬৫০ থেকে ১৭০০ টাকা, রণজিত চাল বিক্রি হচ্ছে ২৫ কেজি ওজনের বস্তা ১৩৫০ টাকা, ২৮ জাতের চাল ২৫ কেজি ওজনের বস্তা বিক্রি হচ্ছে ১৩৮০ থেকে ১৪০০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। তিনি আরও জানান, খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি আড়তদারদের দোষারোপ করছেন। তাদের কাছে পাইকারি চাল কেনার মেমো দেখলে বোঝা যাবে কারা বেশি দামে বিক্রি করছেন। এ জন্য প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন। খুচরা বাজার নিয়ন্ত্রণ হলে চালের বাজারে অস্থিরতা কমে যাবে। এ ছাড়া বর্তমানে বাজারে পর্যাপ্ত ধান-চাল সরবরাহ রয়েছে।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল কাবির খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, চালের বাজার স্বাভাবিক রাখতে ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি) কর্মসূচি সচল রাখা হয়েছে। অবৈধ মজুত খুঁজে বের করতে জেলার বিভিন্ন মিল পরিদর্শন করা হচ্ছে। কোথাও অবৈধ মজুত পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া খুচরা বাজারে কেউ যদি দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।