themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে রাজনীতি কীভাবে হবে, সে বিষয়ে অতি দ্রুত রূপরেখা ঘোষণা করা হবে। এই রূপরেখায় থাকবে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ প্রসঙ্গ এবং নতুন সংবিধান রচনর বিষয়ও থাকবে ।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগ থানা চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতি কীভাবে হবে, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা, ‘ফ্যাসিস্ট’ রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও নতুন সংবিধান রচনা—এসব ব্যাপারে অতি দ্রুত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে রূপরেখা দেওয়া হবে। বিপ্লব শেষ হয়নি। বর্তমান সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান রচনার মাধ্যমে বিপ্লব পূর্ণাঙ্গ হবে।
আবদুল হান্নান বলেন, আমরা মুজিববাদী রাজনীতির নিঃশেষ চাইছি। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদে যারা ইন্ধন দিয়েছে, প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ১৪ দলকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক ছাত্রলীগের নেতাদের একেকজনকে ‘সন্ত্রাসী ও জঙ্গি’ হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশে তাদের বিরুদ্ধে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করার দাবি জানান। পাশাপাশি ছাত্রলীগসহ গণহত্যার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান তিনি।
একটি মামলার বিষয়ে তথ্য জানাতে শাহবাগ থানা চত্বরে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করেছিলেন। ওই ঘটনায় বিকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৯১ জনের নাম উল্লেখ করে শাহবাগ থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে মামলার আবেদন করা হয়েছে। এই আবেদনে (এজাহার) অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ৮০০ থেকে ১০০০ জনকে।
মামলার বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার। মামলার আবেদনে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১৮টি হল কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককেও এজাহারে আসামি করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে মামলার আবেদনের বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর রাত নয়টায় একটি গণমাধ্যমে বলেন, এজাহারে অনেক নাম। যাচাই-বাছাই শেষে এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।
শাহবাগ থানা চত্বরের সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘আপনারা যারা আক্রান্ত হয়েছেন, আপনারা প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে তথ্যপ্রমাণসহ নিকটস্থ থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করবেন। কারণ, বিপ্লব-পরবর্তী বাংলাদেশে এসব কুলাঙ্গার, হামলাকারী ও হত্যাকারীদের স্বাধীনভাবে নিশ্বাস নেওয়ার অধিকার নেই। তারা নিশ্বাস নেবে জেলহাজতে।’
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, কালবিলম্ব না করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোয় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। ভিন্নমতাবলম্বীরা নিজেদের অধিকারের পক্ষে বিন্দুমাত্র টুঁ শব্দ করতে পারত না। কেউ কথা বললে তাকে গেস্টরুম-গণরুমে নির্যাতন করে থানায় সোপর্দ করা হতো।
ছাত্রলীগ ফ্যাসিবাদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করেছিল বলে মন্তব্য করেন আবদুল কাদের। তিনি বলেন, এত রক্ত আর জীবনের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্রলীগ নামে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন থাকতে পারবে না। সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান, কালবিলম্ব না করে এই সন্ত্রাসী ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অবিলম্বে মামলার আসামিদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে মামলার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এটা সারা দেশে চলমান থাকবে। প্রতিটি জেলা-উপজেলা এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে মামলা দেওয়া হবে।
সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনের পর ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মশালমিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিলটি শুরু হয়।
মশালমিছিলে ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘মুজিব লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘এক হয়েছে সারা দেশ, ছাত্রলীগের দিন শেষ’ এ রকম স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে ফিরে আসে।
পরে সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্রলীগ থাকবে কি না, তা ঠিক হয়ে গেছে ১৫ জুলাই। ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের কবর রচিত হয়ে গেছে ৫ আগস্ট। ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন আর কখনো হবে না।
আরেক সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, গত ১৫ বছরের কর্মকাণ্ড ছাত্রলীগকে কোনোভাবে ছাত্রসংগঠন হিসেবে বৈধতা দেয় না।