themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121টানা তিন দিনের বৃষ্টি ও পদ্মা নদীর স্রোতে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে শরীয়তপুরে। এতে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন ভাঙন কবলিতরা। স্থানীয়দের দাবি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে এই ভাঙনের শিকার হয়েছে পদ্মার পাড়ের মানুষ।
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা পদ্মা সেতু প্রকল্পের রক্ষা বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার অংশ পদ্মা নদীতে ধসে পড়েছে। ভাঙন ঠেকাতে সরকারের কাছে এলাকাবাসীর দাবি স্থায়ী বেড়িবাঁধের। জিও ব্যাগ ফেলা হলেও ভাঙন থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারছেন না পদ্মা পাড়ের মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে ভাঙন শুরু হয়। পরে বিকেল ৪টার পর ধস ভয়াবহ আকার ধারণ করায় দোকানপাট ও স্থাপনা নদীতে বিলীন হতে থাকে। আজও বেশ কিছু বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়া হলেও ভেঙে পড়েছি একটি পাকা বিল্ডিং। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় সেতুর পূর্ব পাশে সেতুর ভাটির দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় নদীশাসনের বাঁধও। গত বছরের নভেম্বর মাসে প্রথম ধস দেখা দেয় নাওডোবার জিরো পয়েন্ট এলাকায়। চলতি বছরের ৮ জুন সকালেও পদ্মা সেতু প্রকল্পের রক্ষা বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার অংশ নদীতে ধসে পড়ে।
সোমবারের ধসের ঘটনায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। বাঁধ ধসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকার আলম খার কান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি এবং ওছিম উদ্দিন মুন্সি কান্দি গ্রাম। এসব গ্রামের অন্তত ৬০০ পরিবার নদী ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ভাঙনে পদ্মায় বিলীন হয়েছে ৬টি বসতবাড়ি এবং ১৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। একে একে দোকানপাট ও ঘরবাড়ি নদীতে পড়তে থাকায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। আতঙ্কে অন্তত ৩০টি বাড়ি ও ২০টির বেশি দোকানপাট অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘দুপুর ৩টা থেকে হঠাৎ বাঁধের মাটি সরে যেতে থাকে। বিকেল ৪টার পর একের পর এক দোকানপাট আর ঘরবাড়ি পদ্মায় পড়তে থাকে। আমরা খুবই আতঙ্কে আছি। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ না দিলে পুরো এলাকা বিলীন হয়ে যাবে।’
হাজী মমিন আলী মাঝি কান্দি এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. জলিল সরদার বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই নদীতে স্রোত বেশি। বাঁধের পেছনে ফাটল দেখা দিয়েছিল, কিন্তু কেউ গুরুত্ব দেয়নি। এখন পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী রায় বলেন, ‘এলাকায় ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে এবং ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান বলেন, ‘আমরা মেজারমেন্ট ট্যাপ দিয়ে এখনো মাপতে পারিনি। আনুমানিক ২০০ মিটারের মতো ভাঙন হয়েছে। আমাদের ডাম্পিংয়ের পরে এই ভাঙনটা হয়েছে। এটা বিবিএ একটা অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করেছিল। তারপরও আমরা জরুরিভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছি। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।