Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the themesdealer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
ডলার রেটে ঋণঝুঁকিতে বাংলাদেশ ডলার রেটে ঋণঝুঁকিতে বাংলাদেশ – notunalonews24

ডলার রেটে ঋণঝুঁকিতে বাংলাদেশ

Reporter Name / ৩৭ Time View
Update : শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫

বাজেট সহায়তা ও প্রকল্পের নামে ঢালাওভাবে নেওয়া বিদেশি ঋণ এখন সরকারের গলার ফাঁস হয়ে উঠেছে। একদিকে বাড়ছে সুদের হার, অন্যদিকে আসল পরিশোধের কিস্তির পরিমাণ বাড়ছে বছর বছর। সবচেয়ে বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে ডলার রেট। টাকার মান কমে যাওয়ায় বিদেশি ঋণ পরিশোধে সরকারকে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, কেবল রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে গৃহীত রাশিয়ান ঋণ পরিশোধ করলে চুক্তির সময়ের চেয়ে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা বেশি দিতে হবে। ডলার রেট বাড়লে ঋণের পরিমাণ আরও বাড়বে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শুধু সরকারের নেওয়া বিদেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা জিডিপির ১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ; ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া নতুন অর্থবছর শেষে এই ঋণের স্থিতি বেড়ে প্রায় ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়াবে, অর্থাৎ জিডিপির ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশে উঠে যাবে। এই স্থিতি থেকে গত অর্থবছরে সরকারকে আসল পরিশোধে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি পরিশোধ করতে হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুন শেষে পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। আর ২০২৫-২৬ অর্থবছর শেষে বিদেশি ঋণের আসলের কিস্তি পরিশোধে সরকারকে ব্যয় করতে হবে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। নতুন করে আর কোনো ঋণ না নিলেও শুধু ডলার রেট বেড়ে যাওয়ায় বিদেশি ঋণ বাবদ কিস্তি পরিশোধ বেড়ে যাবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বৈদেশিক ঋণ এখন সরকারের সামনে দুই ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে। একটি হচ্ছে সুদের হারসংক্রান্ত ঝুঁকি এবং অপরটি বিনিময়হার-সংক্রান্ত ঝুঁকি। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় একই ঋণের বিপরীতে বেশি পরিমাণ টাকা দিতে হবে সরকারকে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে যে পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলোর গ্রেস পিরিয়ড শেষে আসল ও সুদ একযোগে পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে বছর বছর ঋণের কিস্তি বাড়ছে, যা সরকারের আর্থিক খাতে ঝুঁকি তৈরি করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চার বছর আগেও যেখানে ১ ডলার ঋণ পরিশোধে স্থানীয় মুদ্রায় ৮০ থেকে ৮৫ টাকা ব্যয় হতো, এখন সেখানে ১২২ থেকে ১২৫ টাকা ব্যয় হচ্ছে। এটি সরকারের আর্থিক সক্ষমতায় বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে।

মেগা প্রকল্পের মেগা ঋণের চাপ : নাগরিক প্ল্যাটফর্মের ‘বাংলাদেশের বৃহৎ বিশটি মেগা প্রকল্প : প্রবণতা ও পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০ মেগা প্রকল্পের সর্বমোট ব্যয় ছিল প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার। তার মধ্যে ৪৩ বিলিয়ন ডলার নেওয়া হয়েছে বিদেশি ঋণ হিসেবে। কর্ণফুলী নদীতে টানেল প্রকল্পের জন্য নেওয়া চায়নিজ ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হয়েছে প্রকল্পটি উদ্বোধনের আগেই। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ২ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি হয় ২০১৮ সালে। গত বছরের এপ্রিলে এই প্রকল্পের পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়েছে। ডিপিডিসি প্রকল্পের আওতায় পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্পে ২০১৯ সালে চীনের কাছ থেকে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেয় সরকার। এই ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়েছে গত বছরের জুনে। এ ছাড়া রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণের কিস্তি পরিশোধের বড় চাপ রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৬ সালে এই প্রকল্পের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হবে। ফলে আগামী বছর থেকেই আসল ও সুদ পরিশোধ করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নে রাশিয়া থেকে ঋণ নেওয়া হয় ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলার। ২০১৬ সালে যখন এই ঋণের চুক্তি হয় তখন প্রতি ডলারের বিপরীতে টাকার মান ছিল ৭৮ থেকে ৭৯ টাকা। ফলে স্থানীয় মুদ্রায় ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৮ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে ডলারের বিপরীতে টাকার মান দাঁড়িয়েছে ১২২ টাকা। ফলে ৯৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ এখন বেড়ে ১ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকায় উঠে গেছে। দেখা যাচ্ছে, শুধু বিনিময়হারের কারণে একই পরিমাণ ঋণ নিয়ে একটি প্রকল্পে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে। আগামী বছরে টাকার মান আরও কমলে এ ধরনের মেগা প্রকল্পের কিস্তি পরিশোধে সরকারের ব্যয় আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে খোদ অর্থ মন্ত্রণালয়।

বাজেটের সঙ্গে দেওয়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতিতে বিদেশি ঋণের ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরে বলা হয়েছে মেয়াদপূর্তি, গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়া এবং টাকার অবমূল্যায়নের কারণে আগামী বছরগুলোতে ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বাড়বে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার অবমূল্যায়নের ফলে টাকার অঙ্কে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাচ্ছে। কারণ একই পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে এখন আরও বেশি টাকার প্রয়োজন হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা বর্তমান তারল্য সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য ঋণ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি।

সাবেক অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সাধারণত লন্ডন ইন্টার ব্যাংক অফারড রেটের (লাইবর) সঙ্গে ১ বা ২ শতাংশ যুক্ত করে বৈদেশিক ঋণ নিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে ঝুঁকি হচ্ছে, লন্ডন ইন্টার ব্যাংক অফারড রেট বেড়ে গেলে সুদের হার বেড়ে যাবে। দ্বিতীয়ত এক্সচেঞ্জ রেট বা বিনিময়হার বেড়ে গেলেও বৈদেশিক ঋণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আমাদের সময় এই ঝুঁকি ছিল না। তখন বিনিময়হার নির্ধারণ করে দেওয়া হতো। বর্তমানে বিনিময়হার-সংক্রান্ত ঝুঁকি বেড়ে গেছে। সাম্প্রতিক ডলারের বিপরীতে টাকার মানের অবনমন ঘটেছে। উপরন্তু বিনিময়হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে সরকার। এতে করে স্থানীয় মুদ্রা টাকার প্রকৃত শক্তি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেলেও বিদেশি ঋণ পরিশোধে ঝুঁকি বেড়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri
deneme bonusu veren siteler - canlı bahis siteleri - casino siteleri casino siteleri deneme bonusu veren siteler canlı casino siteleri