themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114সম্প্রীতি ও বৈষম্যহীন দেশ গড়তে হলে নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্তকরণ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানবিক মর্যাদা, সাংবিধানিক অধিকার এবং সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিহিংসা মুক্ত রাজনীতি ও স্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয় এবং সম্প্রীতি ও বৈষম্যহীন দেশ গড়ার প্রত্যাশা বিশিষ্টজনদের।
রবিবার রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা সিটির সভাকক্ষে কালের কণ্ঠ আয়োজিত ‘বিজয় দিবস: নতুন প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, গবেষক, পেশাজীবী এবং রাজনীতিবিদরা।
দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড (ইডব্লিউএমজিএল) উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি, মাল্টিমোড গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) জামিল ডি আহসান।
এছাড়াও সিনিয়র আইনজীবি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, একুশে পদকপ্রাপ্ত বুদ্ধিজীবি অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, রামরুর চেয়ারম্যান, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক তাসনীম সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক থোয়াই চিং মং সাক, লেখক এবং পোর্টেট ফটোগ্রাফার নাসির আলী মামুন, জাতীয় নাগরিক কমিটির সহ-মুখপাত্র তাহসিন রিয়াজ প্রমুখ।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমাদের গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার, সার্বভৌমত্ব, ন্যায়বিচার ও ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। ফ্যাসিস্ট চলে গেছে, আর কোন ফ্যাসিস্ট যেন ফিরে না আসে। আমরা এখন সম্প্রীতি, মানবিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুবউল্লাহ বলেন, এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে ৭২ এর সংবিধান তৈরি হয়েছিলো। এই সংবিধান দিয়ে একটি দেশ চলতে পারে না। সংবিধান নতুন করে লিখতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি করতে হবে। যেটার মধ্যদিয়ে আমরা জনগণের বিভিন্ন আকাঙ্ক্ষাকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারব। এটি সম্ভব একটি নতুন সংবিধানের মধ্যদিয়ে, নতুন সংবিধান হতে হবে জনগণের কাছে সুপাঠ্য এবং সহজে বোধগম্য। যে সংবিধানে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করতে হবে।
ব্যবসায়িদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, সমাজে এক শ্রেণির মানুষ সম্পদ সৃষ্টি করছে, যারা সেই সম্পদের পুরো সুবিধাভোগী নয়। অন্য একটি শ্রেণি বিদেশে সম্পদ পাচার করছে। তাই আমার একটি বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক সমাজ চাই। তবে প্রশ্ন হলো এই প্রত্যাশা কে পূরণ করবে? আমরা চাই এমন একটি সরকার, যারা মানুষের মর্যাদা দিবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সাম্য-ন্যায়ের প্রত্যাশার সংগ্রাম শুরু হয়েছে তা জারি রাখতে হবে। অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে মানুষের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে সেটি পূরণে আমাদের আরও বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হয় তরুণ সমাজের নেতৃত্বে আমাদের পথ চলতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানি ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, জবাবদিহিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় সংস্কার প্রয়োজন। এজন্য বর্তমান সরকার সংস্কার কার্যক্রম করছে। তবে সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ দেওয়া প্রয়োজন। অনির্দিষ্টকালের জন্য কোন সংষ্কার হতে পারে না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) জামিল ডি আহসান বলেন, আবেগ ও বিপ্লবের সঙ্গে সরকার পরিচালনা এক জিনিস নয়। এজন্য উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে রসায়নটা আরও বেগবান করতে হবে।
সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, একাত্তর থেকে চব্বিশে কেউ কথা রাখেনি। এমন রাজনৈতিক কাঠামো চাই যেখানে কোন ফ্যাসিবাদ আসতে পারবে না। আমরা মনে করি প্রত্যাশিত সংস্কার হবে। তবে সেটা চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কারের সঙ্গে নির্বাচনের আলোচনা চলবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন চাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, চব্বিশের অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শাসন ব্যবস্থার পতন হয়েছে। আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে নিজ নিজ জায়গা থেকে সবাই যেন টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও শ্বেতপত্র প্রনয়ণ কমিটির সদস্য তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, ক্ষমতা কখনো এক ব্যক্তির হাতে থাকবে না, এটা হতে দেওয়া উচিত না। ক্ষমতা বিভাজনের জন্য দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা প্রয়োজন।