নিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশ সেন্টারের সদস্য মুমিনুল ইসলাম শিপন মিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ সেন্টারের বার্ষিক অডিট নীতি অনুসারে অডিট কমিশন গঠন করা হয়। জনাব নবাব উদ্দিনকে তদন্ত কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। নবাব উদ্দিন সাহেবের নেতৃত্বে কমিশন ২০২৩ অর্থ বছরের হিসাব-নিকাশের অডিট সম্পন্ন করেন এবং
তদন্তে বাংলাদেশ সেন্টারের সংবিধান লঙ্ঘন ও তহবিলের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি উদঘাটন করেন তিনি।
বাংলাদেশ সেন্টার দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী সংগঠন হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে সম্প্রতি সংগঠনের পরিচালনা পদ্ধতিতে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। জন্ম লগ্ন হতে এ সংগঠন সিলেকশন পদ্ধতিতে কমিটি নির্বাচন করা হলেও ২০২৩ সালে প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠন করে কমিটি নির্বাচন করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এই নির্বাচন কমিশনের
নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে সেন্টারের সদস্য গনের মাঝে অসন্তোষ ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়, বিশেষ করে ১২৫ জন সদস্যের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যার মধ্যে ১০ জন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ৪ জন কর্পোরেট সদস্য এবং ১১১ জন স্থায়ী সদস্য রয়েছেন।
নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অসংগতি:
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে “গ্রিন এলায়েন্স” এবং “রেড অ্যালায়েন্স” নামে দুটি গোষ্ঠী রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, গ্রিন এলায়েন্স ২০ জন স্থায়ী সদস্যের পরিবর্তে ১৮ জন অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং রেড অ্যালায়েন্স ১৫ জন সাধারণ সদস্যের পরিবর্তে ১৭ জনকে নিয়েছে, যা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। নির্বাচন পরবর্তী মেজরিটি গঠনের পদ্ধতি নিয়েও বিতর্ক দেখা দিয়েছে, যা সেন্টারের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থার সংকট তৈরি করেছে।
৫,০০০ পাউন্ডের বিতর্কিত চেক লেনদেন:
২০১১ সালের ৪ মার্চ এইচএসবিসি ব্যাংকের চেক নং ১০৪৫০০-এর মাধ্যমে ৫,০০০ পাউন্ড নগদ উত্তোলন করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল সেন্টারের গরম জলের বয়লার মেরামত ও প্রতিস্থাপন। কিন্তু পরবর্তী পর্যবেক্ষণে বয়লার প্রতিস্থাপনের কোনো নথি বা রসিদ পাওয়া যায়নি। সাবেক কোষাধ্যক্ষ খন্দকার ফরিদ উদ্দিন এবং যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম চেকের বিষয়ে সম্পূর্ণ অনবগত বলে দাবি করেন। ফরিদ উদ্দিন জানান, তিনি সৌদি আরবে থাকাকালীন এই লেনদেন সম্পন্ন হয় এবং এ বিষয়ে কোনো দায়িত্ব নিতে তিনি অপারগ। সিরাজুল ইসলামও একইভাবে যুক্তরাজ্যে থেকে যান এবং শুধুমাত্র ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর প্রদান করেন, যার ফলে পরবর্তী সময়ে এই চেক ইস্যু নিয়ে সন্দেহের উদ্রেক হয়।
সাবেক সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য:
সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বিষয়টি নিয়ে সেন্টারের প্রধান নির্বাহী এস এম মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন এবং সমস্ত নথি সেন্টারের অফিসে সংরক্ষিত থাকার কথা জানান। তবে প্রধান নির্বাহী নির্দিষ্ট নথি প্রদান করতে ব্যর্থ হন, যা সেন্টারের অর্থ লেনদেনের যথাযথ পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ার অভাব নির্দেশ করে।
সদস্যদের দাবি:
সদস্যরা এ ধরনের বিতর্কিত লেনদেন এবং সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে ভবিষ্যতের প্রতিটি পদক্ষেপে স্বচ্ছতা ও সঠিকভাবে সংবিধানের প্রয়োগ নিশ্চিত করার দাবি তুলেছেন।