ওয়াহিদ খাঁন নিউক্যাসল থেকে:ইংল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিউক্যাসল শহরের বিশিষ্ট বাংলাদেশী কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব, জনাব আলহাজ্জ মাহমুদ মিয়া, সম্প্রতি রাজা চার্লস তৃতীয়ের আয়োজিত গার্ডেন পার্টিতে যোগ দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। রাজকীয় বাকিংহাম প্যালেসে আয়োজিত এই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানে তাকে সমাজের প্রতি তার দীর্ঘদিনের অবদান ও নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ আমন্ত্রণ জানানো হয়।
জনাব মোঃ মাহমুদ মিয়া একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, যিনি ১৪ বছর বয়সে ১৯৬০-এর দশকে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে এসে দীর্ঘ দিন বিভিন্ন শহরে থাকার পর ১৯৭০-এর দশকে নিউক্যাসলে এসে ব্যবসা শুরু করেন। তিনি শুধু একজন সফল উদ্যোক্তাই নন, বরং বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা, এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য নিবেদিতপ্রাণ একজন সমাজসেবক। সুদীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে তিনি বাংলাদেশী কমিউনিটির উন্নয়নে অবদান রেখে আসছেন, স্থানীয় মসজিদ ও মাদ্রাসার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন এবং কমিউনিটি সেন্টার স্থাপনের ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
দেশজুড়ে বিভিন্ন সমাজে অবদান রাখা হাজারো আমন্ত্রিত অতিথির সঙ্গে তিনি এই গার্ডেন পার্টিতে অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি সংগীত, চা-আপ্যায়ন এবং রাজপরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
রাজকীয় বাগানে অনুষ্ঠিত এই গার্ডেন পার্টিতে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে জনাব মিয়া বলেন,
“এই নিমন্ত্রণ শুধু আমার জন্য নয়, এটি আমাদের পুরো কমিউনিটির জন্য এক গৌরবের মুহূর্ত। আমি ধন্য, কারণ আমাদের অবদান ব্রিটিশ সমাজে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমি এই সম্মান বাংলাদেশের প্রতিটি অভিবাসীর সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই, যারা নিরলস পরিশ্রম করে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন।”
জনাব মিয়া বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নর্থইস্ট বাংলাদেশী এওয়ার্ড কর্তৃপক্ষের প্রতি, যাঁরা তাঁকে এই গার্ডেন পার্টির জন্য মনোনয়ন করেন। উল্লেখ্য নর্থইস্ট বাংলাদেশী কমিউনিটির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘নিবা’ ২০২৩ সালের ‘লাইফটাইম এচিভমেন্ট এওয়ার্ডে’ ভূষিত হন জনাব মাহমুদ মিয়া।
স্থানীয় কাউন্সিলর ও সাবেক লর্ড মেয়র হাবিব রহমান তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন,
“মাহমুদ মিয়ার অর্জন আমাদের সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছে যে, নিষ্ঠা, সততা ও মানুষের জন্য কাজ করলে তার মূল্যায়ন একদিন হয়। তিনি আমাদের গর্ব।” তার সম্মানজনক উপস্থিতি শুধু ব্যক্তিগত গর্বের বিষয় নয়, বরং এটি বৃহত্তর কমিউনিটির জন্য অনুপ্রেরণার একটি শক্তিশালী বার্তা।
একজন তরুণ অভিবাসী উদ্যোক্তা থেকে একজন শ্রদ্ধেয় কমিউনিটি নেতায় পরিণত হওয়া – একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্প। রাজকীয় গার্ডেন পার্টিতে তার স্বীকৃতি প্রমাণ করে যে, আন্তরিকতা ও সমাজের প্রতি অবিচল ভালোবাসা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্মান পেতে পারে।