themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/notunalo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিতে স্বতন্ত্র সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। কমিশন মনে করে এ সংস্কারের মাধ্যমে কার্যকরভাবে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হবে বিচার বিভাগ। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠায় অন্যতম বাধা সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে বলেছে কমিশন। আর সচিবালয়ের জন্য নতুন ভবন নির্বাচন করতেও বলা হয়েছে প্রতিবেদনের সুপারিশে। সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০টি অনুবিভাগের সমন্বয়ে গঠন করতে হবে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়। এসব অনুবিভাগের আওতায় থাকবে ২৫ অধিশাখা ও ৪৮টি শাখা। সচিবালয়ের জন্য নতুন অনেক পদও সৃষ্টি করতে বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিচার কার্যক্রম আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে ৩২ বিষয়ে সুপারিশসহ ৩৫২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। অনুলিপি দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও।
বিচার বিভাগের বিদ্যমান দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ২২, ৯৪(৪) এবং ১১৬(ক) অনুচ্ছেদের বিধান এবং মাসদার হোসেন মামলার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, ছুটি, শৃঙ্খলা ইত্যাদি বিষয় নির্বাহী বিভাগের আওতায় থেকে গেছে। একইভাবে অধস্তন আদালতের বিচারকদের ওপর সুপ্রিম কোর্ট এবং আইন মন্ত্রণালয় এ দুটি কর্তৃপক্ষের যুগপৎ নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় স্বতন্ত্র সচিবালয়ের বিকল্প হতে পারে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য একটি আইন বা অধ্যাদেশ প্রণয়ন করতে হবে। এতে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, সচিবালয়ের দায়িত্ব ও কর্তব্য, সচিবালয়ের নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব, সচিবালয়ের কার্যপদ্ধতিসহ বিস্তারিত থাকবে। জনবল ও অবকাঠামোর বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বিচার বিভাগ এবং বিচার বিভাগের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠান, বিভাগ ও দপ্তর সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের একটি সময়োপযোগী সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি করতে হবে। এ কাঠামোতে সুপ্রিম কোর্ট ও বিচারকর্ম বিভাগ নামে পৃথক দুটি ইউনিট থাকবে।
প্রতিবেদনে ১০টি অনুবিভাগের সমন্বয়ে সচিবালয় গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। এই ১০ অনুবিভাগ হলো- প্রশাসন অনুবিভাগ, বাজেট ও নিরীক্ষা অনুবিভাগ, সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ, শৃঙ্খলা ও তদন্ত অনুবিভাগ, গবেষণা ও সংস্কার অনুবিভাগ, ক্যারিয়ার প্ল্যানিং ও প্রশিক্ষণ অনুবিভাগ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অনুবিভাগ, ই-জুডিশিয়ারি অনুবিভাগ, রিপোর্ট অনুবিভাগ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি দুই অনুবিভাগের সমন্বয়ের জন্য একজন অতিরিক্ত সচিবকে দায়িত্ব দিতে হবে। আর প্রতি অনুবিভাগের দায়িত্ব পালন করবেন ১০ অতিরিক্ত সচিব। এ জন্য পাঁচটি অতিরিক্ত সচিব ও ১০টি যুগ্ম সচিবের পদ সৃষ্টি করতে হবে। পাশাপাশি সব অনুবিভাগ, অধিশাখা, শাখা এবং সেল ও ইউনিটের জন্য পদ সৃষ্টি করতে বলেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। শুধু সাংগঠনিক কাঠামো নয়, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন ভবন নির্মাণ করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অফিস স্থাপন করতেও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনের সুপারিশ অংশে বিচার বিভাগের দাপ্তরিক কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের অধীনে প্রয়োজনীয় বিধি ও সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় নির্দেশমালা প্রণয়ন করতে হবে।
প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পর গত বছর ২১ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। সেখানে তিনি বহুল আলোচিত মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। এরপর সুপ্রিম কোর্টের পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠায় আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবও প্রেরণ করেন। এরপর থেকেই নতুন আলোচনায় আসে আলাদা সচিবালয়ের বিষয়টি। এর আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও পৃথক সচিবালয় গঠন করেনি। সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় বলেন, প্রস্তাবিত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় বিচারিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।