বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান, তার বোন শাহিনা খান ও মা ইকবাল মান্দ বানুর ব্যাংকের লকারে ‘জব্দ’ অবস্থায় থাকা এক কেজি ৬৭০ গ্রাম অলঙ্কার তাদের জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক রাজধানীর ধানমন্ডি শাখার দুটি লকারে থাকা এই অলঙ্কারের মধ্যে রয়েছে- সোনার চেইন, হাতের বালা ও আংটি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালত গতকাল বৃহস্পতিবার হিসাবধারী পক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেয়।
এসব অলঙ্কার ২০০৭ সাল থেকে ব্যাংকটির ওই শাখার জিম্মায় ছিল। আদালত স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের জিম্মা বাতিল করে হিসাবধারী তথা পরিচালনাকারী কাস্টমারদের অনুকূলে চালু করতে অনুমতি দিয়েছে।
এ বিষয়ে শাহিনা খানের আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, জোবাইদা রহমান, শাহিনা খান ও ইকবাল মান্দ বানুর নামে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ধানমন্ডি শাখায় দুটি লকার ছিল। সেখানে তাদের স্বর্ণের অলঙ্কার ও রুপা রাখা ছিল। ২০০৭ সালে ধানমন্ডি থানার জিডি মূলে লকার দুটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার তৎকালীন সেলস টিম ম্যানেজার আবদুল্লাহ আল জায়ীদের কাছে আদালত জিম্মায় দেয়। আমরা লকারগুলোর হিসাবধারী তথা পরিচালনাকারী কাস্টমারদের অনুকূলে চালু করতে আদালতে আবেদন করলে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
আদালত আদেশে উল্লেখ করেছে, ২০০৭ সালের ২৫ মার্চ ধানমন্ডি থানায় জিডি মূলে জোবাইদা রহমান (স্বামী- তারেক রহমান), জোবাইদার বোন শাহিদা খান এবং তাদের মা ইকবাল মান্দ বানুর নামে বরাদ্দ স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ধানমন্ডি শাখায় থাকা ৩৬/২৩ এবং ৩৬/২৪ নম্বর লকার থেকে এক কেজি ৬৭০ গ্রাম অলঙ্কারাদি জব্দ করা হয়। পরবর্তীকালে ওইদিনই জব্দ অলঙ্কার ব্যাংকটির ওই শাখার তৎকালীন সেলস টিম ম্যানেজার আবদুল্লাহ আল জায়ীদের কাছে আদালত জিম্মায় দেয়।
পরবর্তীকালে আবেদনকারী শাহিনা খান নিজে, তার মা ইকবাল মান্দ বানু ও বোন জোবাইদার যৌথ নামে বরাদ্দপ্রাপ্ত লকার চালু করার আদেশ দিতে আদালতে আবেদন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা তথা ধানমন্ডি মডেল থানা একাধিকবার প্রতিবেদনও দাখিল করেন।
এর আগে ধানমন্ডি মডেল থানা কর্তৃক দাখিলি প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায়, জিডি মূলে জব্দ আলামতের বিষয়ে আর কোনো মামলা মোকদ্দমা নেই। ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনায় আরো দেখা যায়, জব্দ আলামত অলঙ্কারাদি ব্যাংকটির ওই শাখার কাস্টডিতেই জমা আছে।
এ অবস্থায় সার্বিক পর্যালোচনায় যেহেতু জব্দ আলামত বিষয়ে আর কোনো মামলা নেই এবং যেহেতু আবেদনকারী কথিত লকার পরিচালনাকারীদের অনুকূলে তা চালু করার আবেদন করেছেন এবং যেহেতু এতে রাষ্ট্রপক্ষের কোনো আপত্তি নেই, ফলে ব্যাংকটি ধানমন্ডি শাখায় জব্দ আলামতের জিম্মা বাতিল করা হলো।
অন্য কোনো আদালতের ফ্রিজ আদেশ না থাকা সাপেক্ষে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ধানমন্ডি শাখার হিসাব নম্বর ১৮-১২০৪-৭৮৫ এর অধীনে যৌথ লকার ৩৬/২৩ এবং ৩৬/২৪ অতি সত্বর ওই লকারগুলোর হিসাবধারী তথা পরিচালনাকারী কাস্টমারদের অনুকূলে চালু করতে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ধানমন্ডি শাখা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় আদালত।